শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রাজৈরে ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে সনাতনী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত। টেকেরহাট শহীদ সরদার সাজাহান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে ” জুলাই গণ অভ্যুত্থান”দিবস উদযাপিত। ভোগ বিলাসে উপদেষ্টারা ব্যস্ত : রংপুরে সাদিক শার্শায় হতদরিদ্রের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির চাল ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক-২ কদমবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের শপথবাক্য পাঠ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদারীপুরে বাবুর্চি সহ ২টি মরদেহ উদ্ধার মুকসুদপুরের বাটিকামারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন সেলিমুজ্জামান সেলিম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার- পরিকল্পনা বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত “সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর আগে ভাবুন—এই ৫টি দিক”

বৃষ্টির অভাবে দেশব্যাপী মরুর উত্তাপ

আলেকিত জনপদ ডেস্ক
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৩০৩ Time View

চলতি মাসের শুরু থেকেই দেশব্যাপী বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। শুরুতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ থাকলেও ক্রমে তা তীব্র থেকে অতি তীব্র হয়ে উঠেছে। এমনিতে এপ্রিল বছরের উষ্ণতম মাস; তবে অন্যান্য যে কোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে এবারের মাসটি। অসহনীয় গরমে এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাঁসফাঁস করছে জনজীবন।

মাসের এখনও বাকি ৭ দিন, এরই মধ্যে কয়েক দফায় হিট এলার্ট জারি হয়েছে দেশে। মাসের মাঝামাঝি এসে প্রতিদিন মরুর দেশগুলোর তাপমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে অস্বাভাবিক কম। আর এটাই কারণ এবারের তাপমাত্রা বিপর্যয়ের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে সারা দেশে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ২৩ মিলিমিটার। অথচ এ মাসে দেশের গড় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ১৩০ মিলিমিটার। অর্থাৎ ২১ এপ্রিল পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৮ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে দেশে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মাসের বাকি দিনগুলোতেও খুব বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল আবারও হিট এলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে চলমান তাপপ্রবাহ। এর মধ্যে গরমের অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে।

তাপমাত্রা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই ছিল তাপপ্রবাহ। মাসের প্রথম দিনে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ছিল দেশের চার বিভাগে, যা জারি ছিল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। পরদিনই তাপমাত্রা এক লাফে অতিক্রম করে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায় এদিন। এরপর দিন থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত অনেকটাই কমে আসে তাপমাত্রা ও তাপপ্রবাহের বিস্তৃতি।

কিন্তু ১১ এপ্রিল থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। ২০ এপ্রিল তাপমাত্রা উঠে যায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রেকর্ড হয় এদিন। যশোরের তাপমাত্রা এদিন ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সব মিলিয়ে টানা ২২ দিন ধরে চলছে এই তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি তাপমাত্রা হলে তখন তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়।

টানা এই তাপপ্রবাহকে অস্বাভাবিক বলছেন আবহাওয়াবিদরা। মো. বজলুর রশিদ নামে আবহাওয়া অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘মৌসুমের এই সময় তাপমাত্রা বেশি থাকা স্বাভাবিক। দুই-তিনটি তাপপ্রবাহ থাকবে, এটাও স্বাভাবিক। কিন্তু তাপপ্রবাহের স্থিতিকাল সাধারণত ছয়-সাত দিন হয়। তাপপ্রবাহগুলোর মাঝে মাঝে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হয়। এতে তাপমাত্রা কিছুদিনের জন্য কমে। এরপর আবার তাপপ্রবাহ আসে। যদি কোনো কারণে এর ব্যত্যয় ঘটে—যেমন কালবৈশাখী বেশি হয়, এটা অস্বাভাবিকতা। আবার টানা তাপপ্রবাহ চললে সেটাও অস্বাভাবিকতা, যা এবার আমরা দেখছি।’

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, গত এক দশক থেকেই এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকছে তাপমাত্রা। এপ্রিল মাসের গড় স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২। তবে এবার এপ্রিলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। অধিকাংশ জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির ওপরে থাকছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মে মাসের আগে দেশের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, ‘এপ্রিল মাস দেশের উষ্ণতম মাস। তবে কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হলে ওই দিন বা তার পরদিন তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকে। যেহেতু দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি সেভাবে হয়নি, ফলে দেশের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিদ্যমান। সামনে দেশের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে বৃষ্টিপাতের তেমন সম্ভাবনা নেই। ফলে চলমান তাপপ্রবাহ সহসাই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত আমরা দেখছি না।’

এদিকে চলমান তাপপ্রবাহে ঢাকা মহানগরের জনবহুল পয়েন্টগুলোতে খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। ২১ এপ্রিল রবিবার ঢাকা ওয়াসার উপপ্রধান জনতথ্য কর্মকর্তা এ এম মোস্তফা তারেক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category
Adsense