আওয়ামীলীগের দলীয় কাউন্সিল গঠন হলেও সহিংসতা কমেনি : আবারও মারামারি ও বোমার বিস্ফোরণ মাদারীপুর-৩ (কালকিনি)-তে মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেড় মাস পার হয়েছে।
আওমীলীগের দলীয় কাউন্সিল গঠন হলেও থামছেনা নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতা। একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটেই চলছে মাদারীপুর-৩ (কালকিনি) আসনটিতে। নির্বাচনে আব্দুস সোবাহান গোলাপের নৌকা সমর্থন করায় অটোভ্যান চালক মো. রুব্বাস মাতুব্বর (৪০) কে পিটিয়ে দু’পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দেয় স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থী ঈগলের সমর্থকরা। চাঁদার দাবিতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এ ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী রুব্বাস মাতুব্বর ঢাকা পোস্ট কে জানান, বিগত ০৯ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১ টার সময় দৈনন্দিন জীবিকার তাগিদে সকালে বাড়ি থেকে অটোভ্যান নিয়ে বের হন। অতঃপর কালকিনি উপজেলার সিডি খান ইউনিয়নের ইয়াসিন সরদারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে। ঈগলের সমর্থকরা ছেনদা, রামদা, লাঠিশোটা, হাতুরী, জিআই পাইপ ও হাত বোমা দিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দলবল সহ এলোপাথারী পিটিয়ে তার দু’ই পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দেয় সহ হত্যার উদ্দেশ্যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ ঘটনায় আজ ২০ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) রুব্বাস মাতুব্বর বাদী হয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মাদারীপুরে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কালাম সরদার (৪৮) কে ১নং আসামী করে মোট ২৫ জনকে আসামী করা হয়। অজ্ঞাত নামা রয়েছে আরও ৫/৭ জন। গুরুত্বর আহত রুব্বাস মাতুব্বর ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ভুক্তভোগী সকালে অটোভ্যান নিয়ে কালকিনির সিডি খান ইউনিয়নে সরদার বাড়ির সামনে পৌছালে। দলবদ্ধ হয়ে তাকে ঘিরে ফেলা হয়। মামলার ১নং আসামী কালাম সরদার দলবল পরিচালনার কথা বলে জোরপূর্বক ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। ভুক্তভোগী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উক্ত ১নং আসামী তার দলের সকলকে খুন জখমের হুকুম দেয়।
হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে মামলার অন্যান্য আসামীগন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এসময়ে মামলার ০৬, ০৮, ০৯, ১১, ১৩নং আসামী যথাক্রমে লোকমান হাওলাদার, কাওছার কবিরাজ, শাহাদাত কবিরাজ, মামুন সরদার ও মিজান সিপাহী পিটিয়ে দু’পা ভেঙ্গে রক্তাক্ত জখম করে। এবং ৩, ৫, ৮ ও ২০ নং আসামী যথাক্রমে রাজিব সরদার, শহিদুল সরদার, কাওছার কবিরাজ, বাবুল প্যাদা বাদীর ডান হাতের উপরের অংশে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়।
এসময়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ২২,২৩,২৪ ও ২৫ নং আসামীগন যথাক্রমে খালেক হাওলাদার, জাকির ফকির (৪০), আমির হামজা (৩৫) ও রুহুলী সরদার (৪০) হাত বোমা বিস্ফরণ ঘটায়। অন্যান্য আসামীরা মারধরের পর বাদীর পকেট থাকা নগদ ৫ হাজার টাকা ও বাটন মোবাইল নিয়ে যায়। পরবর্তিতে শোরগোল ও ডাক-চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে মূমূর্ষ অবস্থায় অটোভ্যান চালককে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাত-পা ভাঙ্গা সহ বোমার স্প্রিন্ডালে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। এ ঘটনায় বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলার বিবরণ ও অবস্থা বিবেচনা করে আসামীদের বিরূদ্ধে এফআইআর এর আদেশ দেন।
Leave a Reply