বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

করাঙ্গী নদী খননে বাড়ছে জনদুর্ভোগ; বৃষ্টিতে ধসে পড়ার আশঙ্কা

নাজমুল ইসলাম হৃদয়, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি 
  • Update Time : শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৭১ Time View

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় করাঙ্গী নদী অপরিকল্পিতভাবে খনন করায় কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ বিশাল আকার ধারণ করেছে। কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন অনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঘরবাড়ি, বাঁধ, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান।

বাহুবল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে এক সময়ের খরস্রোতা ঐতিহ্যবাহী করাঙ্গী নদী। দখল আর দূষণে একসময়ের খরস্রোতা করাঙ্গী নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে এবং সেটি এখন ছোট্ট একটি নালায় পরিণত হয়েছে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে হাওর, খাল-বিল ও নালা শুকনো থাকায় বোরো চাষাবাদে পানির জন্য হাহাকার করেতে হয় হাজার হাজার কৃষকদের। বর্ষা মৌসুমে প্রায় প্রতি বছর নদীর পানি উপচে দুই তীরের ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় । এরই প্রেক্ষিতে সরকারি উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে করাঙ্গী নদী খনন করার বরাদ্দ হয়।

 

নদীর তলদেশ খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে খনন করে তীরেই মাটির স্তূপ করা হচ্ছে। ফলে ভারী বৃষ্টি হলে এই মাটি দিয়ে নদী ফের ভরাট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা নিয়ে প্রবহমান করাঙ্গী নদীর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ এই নদীর খননকাজ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯কোটি ১৭লাখ ৩৮হাজার ২শ ৩৬ টাকা।

সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, ইতোমধ্যে নদীর খননকাজ ৪ ভাগের ৩ ভাগ শেষ হয়েছে। বড় বড় ইউটার্ন রেখে নদী খনন করা হচ্ছে, যা বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পানির স্রোতে ভেঙে যাবে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন দেখা দেবে। তাছাড়া কাজ শেষ করে সামনে এগোনোর ৩-৪ দিনের মাথায় নদীর প্রতিরক্ষা নদীর তীর নদীতে ধসে পড়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর খনন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা বিত্তবানদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করছেন। ইচ্ছামতো স্থানে খননকৃত মাটি ফেলা হচ্ছে, কাজের সাথে ড্রেসিং না করায় শত শত পরিবার মাটি বন্দী।

নদীর তীরের বাসিন্দা জহুরুল মিয়া,কদর চান,ছায়েব আলী ও ফুল মিয়া সহ ৪/৫ জন জানান নদীর তীরে খননে পর বিভিন্ন জায়গা ধসে পড়ে যাচ্ছে এলাকাবাসীর দাবি সরকারের কাছে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ অতবা ব্লক বসানো না হয় বর্ষা মৌসুমে বাড়ি ঘর ভেঙে নদীতে পড়ে যাবে । দয়া করে আমাদের নদীর তীরের বাড়ি গুলো বাঁচান।

অনুসন্ধানে জানা যায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হবিগঞ্জ সদর ও বাহুবল উপজেলার করাঙ্গী নদীর ২০ কিঃ মিঃ খনন কাজের জন্য কক্সবাজারের উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাকারী প্রতিষ্ঠানকে ১৯ কোটি ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ২শ” ৩৬ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়। ৩শ ৮৫ দিনের মধ্যে কাজ সমাপ্তের কথা।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, আমরা নদীর পাড়ে পরিদর্শনে করেছি কয়টি জায়গা সমস্যা আছে বরাদ্দ পেলে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ অথবা ব্লক বসানো হবে। মাটি গুলো একটু শুকিয়ে গেলে ডেসিং করা হবে । ডেসিং যদি সে না করে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাকারী প্রতিষ্ঠানের সাব-ঠিকাদার কাইয়ূম আহমেদ বলেন- নদীতে পানির মধ্যে খনন করবো নাকি সেচ দিয়ে খনন করবো সেটা ইঞ্জিনিয়ার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখবে। সিডিউল মোতাবেক কাজ হচ্ছে নাকি হচ্ছে না তোমাকে কেন বলবো । নদীর পারে বিভিন্ন জায়গা ধসে পড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা আমার দেখার বিষয় না।আমি নদী খননে কাজ পেয়েছি। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখবে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category