লিবিয়ায় দালালদের নির্যাতনের পর ভূমধ্যসাগর দিয়ে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার সময় কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়ে দুই বাংলাদেশি যুবক। সেখানে ভয়াবহ কারাগার খামচাখামচিতে সাজাভোগের পর মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন দুই যুবক। এতে ভুক্তভোগী পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে।
ওই দুই যুবক হলেন- মো. রাকিবুল শেখ (২৫) ও মহিদুল (২৬)। এমন উদ্যোগ নেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা। দাবি দালালদের আইনের আওতায় এনে যেন কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।
মহিদুল উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের পিরের বাসা এলাকার বাসিন্দা ও রাকিবুল খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ভ্যানচালক কালাম শেখের ছেলে।
শনিবার সকালে রাকিবুল শেখ যুগান্তরকে বলেন, দালালরা আমাকে নির্যাতন করে অনেক টাকা নিয়েছে। ধরা পড়ার পর দালালরা কোনো খোঁজ নেয় নাই। একটা কসাইখানার মধ্যে আমাদের রেখেছিল পুলিশ। সেখানে সাড়ে চার মাস ছিলাম। সারা দিনে একটা খবজা (পেঁচানো রুটির মতো) খেতে দিতো। পানি চাইলে মারধর করতো।
তিনি বলেন, লিবিয়ায় মোট এক বছর ছিলাম। দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি দালালদের বিচার চাই।
ভুক্তভোগীদের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, নিজস্ব কোনো সম্পত্তি না থাকায় অন্যের জায়গায় বসবাস করে রাকিবুল ও তার পরিবার। সংসারের মেঝ ছেলে তিনি। বাবা, মা, দাদি, বড় বোন ও ছোট ভাইকে নিয়ে গঠিত সংসারের হাল ধরতে ‘জনপ্রিয় বাগদাদ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিতে’ কাজ করতেন।
পরে ২০২১ সালের মার্চ মাসে আর্থিকভাবে পরিবারে সচ্ছলতা আনার আশায় রাকিবুলকে ধার-দেনা করে ইউরোপের উদ্দেশ্যে পাঠায় পরিবারের লোকজন। তাকে ইতালি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেখিয়ে সাড়ে চার লাখ টাকা নেয় রাজৈর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের রহম বেপারীর ছেলে দালাল মেরাজ বেপারী ও তার বড় ভাই মাসুদ বেপারী।
এরপর লিবিয়ায় নিয়ে মারধর করে ও বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে রাজৈর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমানের মাধ্যমে আরও তিন লাখ টাকা নেন তারা।
এর কিছুদিন পরেই কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ইউনিয়নের মো. ছাপতি সাহার ছেলে মো. তোতা সাহা নামে আরেক দালাল ফোন করে গেম করানোর জন্য ছয় লাখ টাকা চায়। সেই টাকাও মিজানুর রহমান কাউন্সিলরের কাছে দিতে বলে।
পরে টাকা পরিশোধ শেষে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর দিয়ে অবৈধ পথে ইতালি পাঠানোর সময় লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয় রাকিবুল।
এসময় আটক হওয়া সবাইকে খামচাখামচি জেলে বন্দি করে। একইভাবে ভোগান্তির শিকার হয় মহিদুল। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দূতাবাস চেষ্টা চালিয়ে লিবিয়ার ওই জেল থেকে রাকিবুল ও মহিদুলসহ ১১৪ জনকে উদ্ধার করে দেশে এনে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে সপ্তাহ খানিক আগে বাড়ি পাঠায়। এ ঘটনায় দালালদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে সাংবাদিকরা বিভিন্ন দপ্তরে ফোন দেওয়ার পর রাকিবুলের বাবা কালাম জানান, দালালরা কিছু টাকা ফেরত দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছে।
রাজৈর থানার ওসি মো. শেখ সাদিক জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোকিত জনপদ ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
https://www.facebook.com/alokitojanapad
আলোকিত জনপদ টুইটার আইডিটি ফলো করুন
https://twitter.com/alokito_janapad
দেশ বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে আলোকিত জনপদ ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন।
ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন
https://www.youtube.com/channel/UCNzUOMDlhwvg5q6Mu_x3khQ
Leave a Reply