আর মাত্র কয়েকটা মাস, তরপরই নতুন আরেকটা বছরের আগমন হিল্লোল। শীতটা এখনও তেমন করে ঝেকে বসেনি। অক্টোবর চলছে; বাংলায় কার্তিকের প্রভাতলগ্ন। ঠিক যেন ঐ বসন্তের মতোই নাতিশীতোষ্ণ আবেশ, হালকা উষ্ণ উষ্ণ রব, হালকা শীত শীত আভাস।
ফেব্রুয়ারির মধ্যম প্রহরের আবহাওয়ার সাথে বছরের এই সময়টার যেন অন্যরকম একটা সাদৃশ্যভাব বিদ্যমান। প্রেসের অলিগলিগুলোর স্বাভাবিকের চাইতে একটু বেশিই ব্যস্ততা, ছাপার মেসিনগুলোর অভারটাইম লেপ-লেপ আওয়াজ, বাইন্ডিং সুঁচের অর্ঘোমা সেলাই, এ সবকিছু মিলিয়ে বছরের এই সময়টা যেন লেখক-পাঠকদের মনে ফেব্রুয়ারির একটা লোভ সঞ্চার করে দেয়। প্রকাশনীগুলোর অফিসে রাতভর জ্বলে থাকে কফিখোর ডেক্সটপের স্ক্রিন। কোথাও প্রচ্ছদের ফন্ট সিলেকশনের কাজ, তো কোথাও চলছে দিবানিশ প্রুফরিডিং; কোথাও চলছে কবিদের তুমুল আড্ডা, তো কোথাও প্রকাশক আর লেখক বসে আছে মুখোমুখি, গম্ভীর, মাঝখানে চতুষ্পদ টেবিল, তার উপর চুক্তিপত্রের স্ট্যাম্প, দু’টা মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, বিনিদ্র ভাবনা-একটি নবাগত বইয়ের ভবিষ্যত, একটা সদ্য ভূমিষ্ট প্রকাশনীর দীর্ঘায়ু বাসনা, সাহিত্যের চোয়াল পরিপুষ্ট করার স্বার্থহীন শ্রম দানের প্রাথমিক প্রস্তুতি, সাহস! সদ্য জন্মানো পথিকৃৎ প্রকাশনী এবং সাব্বির শাওনের কাব্যগ্রন্থ ‘ভ্রম ভ্রমণ-সাফোর আত্মার খোঁজে’ বইটির কথাই বলতে চাচ্ছিলাম এতক্ষণ। সাহিত্যের মাঠে এরা উভয়ই নতুন। নতুনের নতুনত্ব সৃষ্টির অঙ্গিকার থেকেই পথিকৃৎ প্রকাশনী তার গর্ভ থেকে প্রসব করতে চলেছে নতুন ধাচের কাব্যগ্রন্থ-’ভ্রম ভ্রমণ’। ‘প্রসব’ নিয়ে মতানৈক্যের কিছুই নেই। অনেকের মতে বই মূলত লেখকের দ্বারাই প্রবসিত। তবে একটু ভাবলেই এটা বোঝা যায়, পান্ডুলিপি মূলত লেখকের বীজ, যা নিষিক্ত হয় লেখক-প্রকাশক চুক্তির মাধ্যমে, সাব্বির শাওন এবং পথিকৃৎ প্রকাশনী যেটা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করে ফেলেছে। এবার শুধু প্রসবের অপেক্ষা। আশা করা যায় সময়গুলো বই প্রকাশের অনুকূলে থাকলে নভেম্বররের প্রথম দশকেই ‘ভ্রম ভ্রমণ- সাফোর আত্মার খোঁজে’ বইটি তার সুঠাম দৈহিক আকার অর্জন করে পৌঁছে যাবে পাঠকের দ্বারে।
Leave a Reply