আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন পুরোপুরি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ৩০০টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গিয়ে পূর্ব ঘোষিত প্রাথমিক ২৭২ আসনের মধ্যে কিছু আসন থেকে প্রার্থী বাদ পড়ছেন। এছাড়া, আওয়ামী লীগ শাসনামলে অংশ নেওয়া শরিকদের আসনও প্রায় চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। শিগগিরই চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানিয়েছেন, মাঠপর্যায়ের জরিপ এবং সাংগঠনিক মতামতের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়; প্রয়োজনে পরিবর্তন আনা হতে পারে এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। দল ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে। প্রাথমিক ২৭২ আসনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে দল গত শনিবার মতবিনিময় ও কর্মশালা শেষ করেছে। নতুন কিছু প্রার্থীকে প্রার্থী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাট জেলার চারটি আসনের প্রার্থী অনেকটা চূড়ান্ত। বাগেরহাট-১ আসনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মহাসচিব ও মতুয়া সমাজ ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মন্ডল এবং বাগেরহাট-৪ আসনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার সভাপতি সোমনাথ দেকে প্রার্থী করা হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে শরিকদের আসন সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। সমঝোতার ভিত্তিতে যেখানে প্রার্থী পরিবর্তন প্রয়োজন, বিএনপি ওই আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করবে এবং শরিকরা নিজেদের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন।
বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনে জেলা বিএনপি নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে প্রার্থী করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
যুগপৎ আন্দোলনের তিন জোটের পাঁচজন শীর্ষ নেতার আসনও নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে রয়েছেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-২), গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক (ঢাকা-১২)। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তাদের আসন সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির তিন দিনের কর্মশালায় যারা ডাকা হয়েছে, তাদের প্রার্থিতা প্রায় নিশ্চিত বলে ধরা হচ্ছে। যাদের ডাকা হয়নি, সেই আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা বেশি। এর মধ্যে ঝালকাঠি-২ আসনের ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টু ও কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম-৪ আসনে ঘোষিত প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে আসলাম চৌধুরীকে ডাকা হয়েছে। চট্টগ্রাম-৬ ও যশোর-৬ এর মতো কিছু আসনের প্রার্থী আমন্ত্রণ পাননি।
ফাঁকা ২৮টি আসনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-১ এ শাহাদাত হোসেন সেলিম এবং লক্ষ্মীপুর-৪ এ আশরাফ উদ্দিন নিজানকে প্রার্থী করা হয়েছে। বাকি আসন কয়েকটি দল এবং মিত্রদের জন্য সংরক্ষিত।
দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি জানাচ্ছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেই রয়েছে। রবিবার রাতে কমিটির পরামর্শক্রমে তালিকা চূড়ান্ত হতে পারে। শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
মন্তব্য করুন