
১৯৯৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স খেতাব জিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন নাফিসা জোসেফ। মায়ামি বিচে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় ফাইনালিস্ট হয়ে রাতারাতি সবার নজর কাড়েন তিনি। এরপর মডেলিং, টেলিভিশন ও অভিনয়—সব ক্ষেত্রেই দ্রুত নিজের অবস্থান পোক্ত করে নেন এই প্রতিশ্রুতিশীল তরুণী। কিন্তু উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে ছুটে চলা নাফিসার জীবন থেমে যায় মাত্র ২৬ বছর বয়সে।
১৯৭৮ সালের ২৮ মার্চ দিল্লিতে জন্ম নেওয়া নাফিসা বেঙ্গালুরুতেই বড় হয়েছেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে মডেলিংয়ে যাত্রা শুরু করে ধীরে ধীরে দেশের শীর্ষ মডেলদের সারিতে জায়গা করে নেন তিনি।
তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায় যখন তিনি এমটিভির ভিডিও জকি হিসেবে যুক্ত হন। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ‘এমটিভি হাউসফুল’ সঞ্চালনা করে উপমহাদেশজুড়ে বিপুল ভক্তের মন জয় করেন নাফিসা।
সুভাষ ঘাইয়ের ‘তাল’ ছবিতে একটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় ছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই, অনিল কাপুর ও অক্ষয় খান্না।
প্রকৃত অর্থেই প্রাণিবন্ধু ছিলেন নাফিসা। প্রাণিসুরক্ষা ও নানা দাতব্য কার্যক্রমে যুক্ত থাকার পাশাপাশি টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এই বিষয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক কলাম লিখতেন তিনি।
২০০৪ সালের ২৯ জুলাই নাফিসার আত্মহত্যার খবরে দেশজুড়ে নেমে আসে শোকের ঢেউ। জানা যায়, ব্যবসায়ী গৌতম খন্ডুজার সঙ্গে তার বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। পরে নাফিসা জানতে পারেন যে খন্ডুজা আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এমনও অভিযোগ ওঠে যে, খন্ডুজা নাফিসাকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন।ৃ

নাফিসার পরিবার খণ্ডুজার বিরুদ্ধে মামলা করে তদন্তের দাবি জানায়, যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। মামলাটি ২০০৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মুম্বাই হাইকোর্টে স্থগিত ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাফিসার পুরোনো ভিডিওগুলো প্রায়ই ভাইরাল হয়। বহু ভক্ত এই প্রয়াত মডেল ও অভিনেত্রীকে স্মরণ করে নানা স্মৃতিচারণা শেয়ার করেন। অনেকের মতে, বেঁচে থাকলে নাফিসা ভারতের বিনোদন জগতের শীর্ষ তারকাদের একজন হতে পারতেন।