গাইবান্ধা থেকে সুনামগঞ্জে ভুয়া ব্যবসায়ী সেঁজে প্রতারণার মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মো. রফিকুল ইসলাম সোহেল (৩৯), মোছাঃ শাহানা পারভীন (৪৩), মো. মশিউর রহমান ওরফে মাসুক (৩০), মো. শফিউর রহমান (২৬), রিনা আক্তার (২০) এবং নারগিস আক্তার (৩৪)। তাদের সকলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
বৃহস্পতিবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-৯ এর সিপিসি-৩, সুনামগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কপিল দেব গাইন জানান, গ্রেফতারকৃত এই সংঘবদ্ধ চক্রটি প্রায় ৫/৬ মাস পূর্বে প্রতারণার উদ্দেশ্যে স্বপরিবারে সুনামগঞ্জে এসে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জেলার পেঁয়াজ, রসুন ও আলু ব্যবসায়ীরা।
প্রতারকরা সুনামগঞ্জের রাধানগর পয়েন্ট এলাকায় ‘মেসার্স আব্দুল্লাহ বাণিজ্যালয়’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা বাজার দরের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য পাইকারি দরে বিক্রি করে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের বিশ্বাস অর্জন করে।
বিশ্বাস অর্জনের পর, চক্রটি পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি পণ্যের একটি বড় চালান অন্যজেলা থেকে আনার আশ্বাস দেয় এবং অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকার উপরে নগদ অর্থ অগ্রিম গ্রহণ করে।
র্যাব সূত্রে আরো জানা যায়, গত ২৮ এপ্রিল মোটা অংকের এই টাকা আত্মসাৎ করার কয়েক ঘণ্টা পরই চক্রটি তাদের প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে এবং ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ করে দ্রæত সুনামগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সুনামগঞ্জের স্থানীয় ভোক্তভোগী ব্যবসায়ীদের একজন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি প্রতারণা মামলা (মামলা নং-১৭/২৭০) দায়ের করেন। ঘটনাটি সে সময় সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব-৯, সিলেট এর নির্দেশক্রমে এর সিপিসি-৩, সুনামগঞ্জ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-৯ এর একটি আভিযানিক দল র্যাব-১৩, গাইবান্ধা এর সহযোগিতায় ১১ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখ আনুমানিক রাত ৯:১০ ঘটিকার সময় গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানাধীন শ্রীবর্দীপুর ঘোষপাড়া গ্রামস্থ জনৈক আমিরুলের বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন এবং অভিযানে এজাহার নামীয় ও তদন্তে প্রাপ্ত মোট ৬ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি ইতিপূর্বেও সুনামগঞ্জের মতো অন্যান্য জেলায় একই কায়দায় ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। গ্রেফতারের সময় তারা গাইবান্ধা জেলাকে টার্গেট করে নতুন করে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুনামগঞ্জ জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব-৯ এর এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে বলে প্রেসবিফ্রিংয়ে জানানো হয়।
সম্পাদক
এড. গৌরাঙ্গ বসু (ট্রিপল এম.এ)
প্রকাশক
সবুজ বালা
© ২০২৫ আলোকিত জনপদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত