মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মেহেরপুর-২ আসনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ “চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করেও বিএনপির অস্তিত্ব মুছে ফেলা যায়নি” মাজার জিয়ারত দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন ইলিয়াসপত্নী লুনা মিশরের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মির্জা ফখরুল নতুন অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার সময় যে ৫টি সাধারণ ভুল মানুষ প্রায়ই করে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার পরিত্যক্ত নৌঘাঁটি পুনরায় সংস্কারের কাজ করছে সাগর জাহানের নতুন মেগা সিরিয়াল ‘বিদেশ ফেরত’ ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ‘মায়ের ডাক’ তুলি হয়ে উঠলেন জোটের সহযোগীদের জন্য নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ করল বিএনপি গোপালগঞ্জের তিন আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা

মুরাদনগর গ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ২৩৪ Time View
7

কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী গ্রামে এক পরিবারের তিন জনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার পর পুরো গ্রাম এখন ভয়ে ত্রস্ত হয়ে উঠেছে। গ্রেপ্তার হওয়ার আতঙ্কে গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার জানান, রুবির বাড়ির সামনে প্রায় ৮০-৯০ জন লাঠি-পাটির সঙ্গে উপস্থিত হয়। শুরুতে তারা বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, এরপর জোরপূর্বক প্রবেশ করে। রুবিকে বেধে মারার পর উঠানে ফেলে রাখা হয়। পাশের ঘর থেকে মেয়েরা বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরও মারধর করা হয়।

স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান শিমুল এবং মেম্বার বাচ্চু ঘটনাস্থলে ছিলেন, কিন্তু কেউ কাউকে থামাতে সাহস করেনি। বরং স্থানীয়রা বলছিল, “চেয়ারম্যান সাহেব আছেন, কিছু হবে না।” এরপর থেকে পিটুনি চালানো হয়।

নিহত রুবির আত্মীয় হানিফ মিয়া বলেন, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা সাধারণ মানুষ নয়। তারা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের উপস্থিতি দেখে সাহস পায়। যদি আমরা চুপ থাকতাম না, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নিজেই হামলার শিকার হয়ে এলাকা ছেড়ে এসেছি। পরে উত্তেজিত গ্রামবাসীর কারণে এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অধিকাংশ বাড়ি তালাবদ্ধ, গ্রামের রাস্তাগুলো ফাঁকা এবং পুরুষদের কেউ দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল জানান, রুবির পরিবার দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিল। তবে এইভাবে হত্যাকাণ্ড হওয়া মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। উপরন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বার সামনে থাকার কারণে আমরা মুখ খোলার সাহস পাইনি।

পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, তদন্ত চলছে এবং জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। নিহত পরিবারের এখনো মামলা না করার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা পরিবারের প্রতি সময় ও চাপমুক্ত পরিবেশ দিতে চাই।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি, তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই অভিযান অব্যাহত আছে এবং এখনো কাউকে আটক করা যায়নি।

এর আগে মুরাদনগরে একই পরিবারের মা, মেয়ে ও ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে বাঙ্গরা থানার আকবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কড়ইবাড়ির জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), পুত্র রাসেল মিয়া (২৮) ও কন্যা জোনাকি আক্তার (২৩) কে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও নিহতের আরেক মেয়ে রুমাকে (২৮) গণপিটুনি দেওয়া হয়, তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category