শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

ভালো নেই কালকিনির মৃৎশিল্পীরা

মাদারীপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪
  • ৩৭৮ Time View
40
মৃৎশিল্প হলো প্রাচীন শিল্পকলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। মানবসভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আদিকাল থেকে বংশনুক্রমে গড়ে ওঠা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
ক্রমবর্ধমান সভ্যতার ছোয়ায় অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে দিন দিন মৃৎশিল্প সামগ্রীর চাহিদা যেভাবে হ্রাস পাচ্ছে, তাতে এই শিল্প বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। এই শিল্প এবং এই শিল্পের কারিগররা এখন অসহায় ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
এমনকি তারা হারাতে বসেছে তাদের নৈপুন শৈল্পিক গুনাবলী। শত কষ্ট উপেক্ষা করে অনেকে বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ শিল্পের প্রধান উপকরন মাটি হওয়ায় একে মৃৎশিল্প বলা হয়। এজন্য মাটি দিয়ে তৈরি সব শিল্প কর্মই মৃৎশিল্প।
যাদের পেশা মাটি নিয়ে কাজ করা তাদেরকে কুমার আবার অনেককে বলে পাল সম্প্রদায় বলা হয়। মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে পালপাড়া গ্রাম। এখানে ২০ টির মতো পরিবার আছে যারা এখনও এই পেশা আঁকড়ে ধরে আছে। আদিকাল থেকে বংশনুক্রমে গড়ে ওঠা মাটির সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র তৈরি করে।
পালপাড়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাপস পাল বলেন, ‘মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরির জন্য যে মাটি ব্যবহার করা হয় সেই মাটি পুকুর, ডোবা ও জমিন থেকে নিয়ে আসা হয়। এসব মাটি দিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের মাটির তৈজসপত্র। তার মধ্যে রয়েছে হাড়ি পাতিল, ফুলের টব, কড়াই, কাসাঁসহ বিভিন্ন মাটির আসবাবপত্র। বর্তমানে এর চাহিদা ও বাজার মুল্য অনেক কম। আকার ভেদে হাড়ি ১০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলের টব ৫ থেকে ৫০ টাকা, কড়াই ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
কোনদিন ১০০ কোনদিন ১৫০ টাকা আয় হয়। এই আয় দিয়ে সংসার চলেনা। পরিবারের সদস্য ৭ জন, বউসহ ৫ জনই এ পেশায় জড়িত তারপরও আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। তাই এর পাশাপাশি অন্য কাজ করি। তা দিয়েই জোড়াতালি দিয়ে কোনরকমে সংসার চালাই।’ সরকারি সাহায্য সহযোগিতার কথা জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তেমন কোনো সাহায্য সহযোগিতা এখনো পাইনি।
এ বিষয়ে পাল পাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পি সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কিছুই নাই। পরিবারের সদস্য ৫ জন, বিয়ে হওয়ার পর ২৪ বছর থেকেই স্বামীর সাথে এ পেশায় জড়িত। আগে মাটির আসবাবপত্র ভালোই চাহিদা ছিল, সংসার ভালোই চলতো। কিন্তু এখন চাহিদা কম, সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয়। স্বামী সংসারের খরচ যোগাতে কাজের পাশাপাশি দোকানদারি করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠো ফোনে পৌরসভার কাউন্সিলর মেসবাহউদ্দিন জানান, আমার এখানে সাহায্যের বিষয়ে যারা আসে, যতটুকু জায়গা থাকে ততটুকু করা হয়। তবে তারা আমার কাছে আসলে অবশ্যই সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করবো।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category