মাগুরার পারনান্দুয়ালী গ্রামে বাড়ির রাস্তাকে কেন্দ্র করে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তির উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাগুরা পারনান্দুয়ালী বসত বাড়ির জায়গা-জমি নিয়ে দুই সহোদর ভাইয়ের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে।
ছোট ভাইয়ের অংশ বুঝে না দিয়ে বড় ভাই ভোগ দখলে রেখে উল্টো ছোট ভাইকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছেন এমনটি অভিযোগ তুলেছেন ছোট ভাই অলিউল ইসলাম ।
এ ব্যাপারে ছোট ভাই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাগুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাপ্ত অভিযোগ ও সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, মাগুরা সদর উপজেলার পারনান্দুয়ালী গ্রামের মোল্যা পাড়ার মৃত আব্দুর রশিদ মিয়ার দুই ছেলে ফখরুল ইসলাম ও অলিউল ইসলাম এর মধ্যে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে আনুমানিক ১৬ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে ।
প্রাপ্ত সূত্রমতে, দুই ভাইয়ের পারনান্দয়ালী মৌজায় জেএল,নং,৩৮ রে,সা,নং ৭৮৯,খতিয়ান নং ১১৪০,দাগ নং ৭২২,১০০৯,১০৯২ অংশ অনুযায়ী জমির পরিমাণ ৬০.০০,৪৭.৩১,০৪.০০, শতাংশ। পথিমধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও পাল্টা পাল্টি অভিযোগ করেন আর এভাবেই চলছে এক যুগেরও বেশি।
আজ আঠারো এপ্রিল সরাসরি এক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখতে পাওয়া যায়,১০০৯ নং দাগের ৪৭ শতক ৩১পয়েন্ট জমি নিয়ে বিরোধ দুই ভাইয়ের মধ্যে।
উক্ত জমি বড় ভাই ফখরুল ইসলামের অংশ ২৩ শতক৫০পয়েন্ট জমি বিক্রি করে দেন আলফাডাঙ্গা নিবাসী মাগুরা পারনান্দুয়ালী মোল্লাপাড়া বায়তুল নূর জামে মসজিদের কর্মরত নওশের আলী মুয়াজ্জিন ও তার ভাইদের কাছে।
এ বিষয়ে ছোট ভাই মোঃ অলিউল অলিউল ইসলাম বলেন আমার এই বসতবাড়ি জমিতে ৪৭ শতকের মধ্যে সাড়ে ২৩ শতক আমার এবং সাড়ে ২৩ শতক আমার বড় ভাই কিন্তু আমার বড় ভাই ফখরুল ইসলাম নওশের আলী মোয়াজ্জেম এর কাছে সাড়ে ২৩ শতক বিক্রি করে কিন্তু মোয়াজ্জেম নওশের আলী সাড়ে ২৩ শতাংশ বুঝে নেয়ার পরেও আমার বাড়ির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে আমি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, আমি দূর থেকে রাস্তা তৈরিতে নিষেধ করি তাতেই সে আমার এবং আমার স্ত্রীর উপর আক্রমণ চালায় এবং আমার স্ত্রীর উপর আঘাত হানে।
আমি আপনাদের মাধ্যমে মাগুরা জেলা পুলিশের কাছে বিচার দাবী করিছি। এ সময় তিনি আরো বলেন মোয়াজ্জেম নওশের আলী পারন্দুয়ালীবাসি রানা সহ বিভিন্ন লোক দিয়ে আমাকে জানে মেরে দেয়ার হুমকি প্রদান করে এ সময় আমি একজন কলেজ শিক্ষক হওয়ায় বাংলাদেশ আইনের সহযোগিতা কামনা করছি আপনাদের মাধ্যমে।
ঘটনাস্থল থেকে জানা যায় মাগুরা পৌরসভার সার্ভেয়ার মোঃ আঃ আজিজ শাহিন গত ২৮/০৮/০৫ উক্ত ভাই দের মাঝে বসতবাড়ির জমি মেপে বুঝিয়ে দেন,আর সে ভাবেই চলছে এতদিন, সাম্প্রতিক উক্ত জমি বড় ভাই বিক্রি কালে সরাসরি সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
দূস্কৃতিকারী ও আইন অমান্যকারী উল্লেখ করে ছোট ভাই অলিউল ইসলাম মাগুরা সদরথানা,সাংবাদিক,এন এস আই অনুকূলে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অলিউল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৩০ই মার্চ বড় ভাই ফখরুল ইসলাম,আসমাউল মালা,বিরোধ এর জমি ক্রেতা নওশের আলী, তানিয়া পারভীন,সাজেদা,শামীম রেজা,সখিনা আক্তার সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে মাগুরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অলিউল ইসলাম বলেন,বিবাদীরা আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের ক্ষয়ক্ষতির পায়তারা করছেন।
আমার ভাগের জমির অংশে যাতায়াতের জন্য পথ না রেখে আমার অংশের জমি জোরপূর্বক ভোগদখল করিতেছেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে,আমি কলেজ শিক্ষক হওয়ায় আইনের সহায়তা নিয়েছি। কিন্তু তাতে কোন সুফল পায়নি বরং আজ সকালে আমি এবং আমার স্ত্রীকে মার খেতে হল তাদের হাতে! মাগুরার সদর থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোনো সুফল পাইনি।
বিষয়টি নিষ্পত্তি করার লক্ষে থানা থেকে মাগুরা এস আই জিয়ার উপর দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে। তবে তারা এখনো বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারেন নি বলে সরেজমিন থেকে জানাযায়। মাগুরা সদর থানায় কর্মরত বিট পুলিশ জিয়াউর রহমানের সাথে কথা বললে জানা যায়, ছোট অলিউল ইসলাম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত থাকার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি কিন্তু আজকের এই মর্মান্তিক ঘটনাটি সবাইকে মর্মাহত করেছে।
মাগুরা জেলার রেষ্টি অফিস সূত্রে জানা যায় ২৮/৩/২০২১ বড় ভাই ফখরুল ইসলাম ১০০৯ নং দাগের বাস্ত ৪৭.৩১ শতাংশ জমির অর্ধের মালিক ২৩.৫০ শতক জমি বিক্রি করে দেন, দলিল সুএে বাজার মূল্য দেখা গেছে ১কোটি ৭ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা মাএ। নাম না জানা তাদের আরেক ভাই তিনি বলেন ২৩.৫০ শতাংশ সে পাবে, তাই বিক্রি করেছে তাহলে সামনের রাস্তার জমি কোথা থেকে দিলো সে ? এ দিকে এই বেপারে জমি বিক্রি বিষয় জানতে চাইলে বড় ভাই ফখরুল জানান,আমি কারো জমি বিক্রি করি নাই,জমি ঠিক আছে মাপ দিলে পাওয়া যাবে, তিনি আরও বলেন আমার চাচাতো ভাই আমার দুই শতক জমি রেকর্ড করে নিয়েছে।
তিনি সাংবাদিক কে উদ্দেশ্য গত করে বলেন আপনারা আসেন এলাকায় সবার কাছে জানেন তার পর লেখেন। তবে এ বিষয় নিয়ে গত ১৩ই জুন ২০০৫ সালে গ্রামীন বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রিপোর্ট, তা থেকে বুঝা যায় আজ ২০২১ সাল পর্যন্ত সরাসরি ভাবে এই দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চলে আসছে জমি নিয়ে বিরোধ ।
ভাইদের মধ্যে বিরোধ যতই হোক নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে তা মীমাংসা করে ফেলাই উচিত। ভাইদের মধ্যে বিরোধ থাকলে এর প্রভাব তাদের সন্তানদের মধ্যেও পড়ে।
যৌথ সংসার থাকলে তাতে ফাটল দেখা যায়। বাবা-মা বেঁচে থাকলে তাঁদেরও মানসিক কষ্টের কারণ হয়ে দেখা দেয়। নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের কথা চিন্তা করেই বিরোধের সুষ্ঠু সমাধান করে নেওয়া উচিত। নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকলে সামাজিকভাবেও হেয় হতে হয়।
স্বার্থ টিকিয়ে রাখতে আইনের আশ্রয় নেওয়ার চেয়ে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে প্রয়োজনে কিছুটা স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে হলেও সুষ্ঠু সমাধান করে নেওয়া উচিত।
ভাইয়ে ভাইয়ে মামলা-মোকদ্দমা মানায় না। ইতিমধ্যে এই জমিকে কেন্দ্র করে পক্ষপাতিত্ব সৃষ্টি হয়েছে যা পরবর্তীতে বড় ধরনের সংঘাতের পূর্বাভাস
সম্পাদক
এড. গৌরাঙ্গ বসু (ট্রিপল এম.এ)
প্রকাশক
সবুজ বালা
© ২০২৫ আলোকিত জনপদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত