কর্মকে শুধু পেশাগত দ্বায়িত্ব হিসেবে নয়, বরং দেশাত্ববোধ, মানবতা ও ভালবাসার সমন্বয় ঘটিয়ে কোন কাজ করলে একজন সাধারন মানুষও অসাধারণ হয়ে ওঠেন।
তেমনি একজন অসাধারণ প্রাণপুরুষের নাম মশিউর রহমান। দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ইউএনও থেকে বদলি হয় যোগদান করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় মশিউর রহমান।
যোগদানের পরেই শুরু হয় অনুুুন্নত, অচেনা এক জায়গাকে পরিবর্তনের এক অদম্য কর্মযজ্ঞ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা আর হাাসি মুখে সবার মন জয় করাটা ছিল তার অসাধারণ এক গুন।
আর এ গুন দিয়েই ভোলাহাটের পুরো দৃশ্যই যেন বদলে দিতে থাকেন মশিউর রহমান। রাত-দিন এক করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী উন্নয়নের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।
উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। রাস্তা-ঘাটের সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, দরিদ্র ও ভূমিহীন গৃহহারা মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহ পৌঁছে দেয়া, দেশের ২য় বৃহত্তম বিল 'বিলভাতিয়া'কে কৃষি ইপিজেড করে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে তার প্রক্রিয়া অব্যহত রেখেছেন।
এছাড়া উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসের পুরো চেহারাসহ প্রাচীর রং ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক দূর্লভ ছবি অংকন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তুলির আঁচড়ে রাঙিয়েছেন। শুধু উপজেলা পরিষদই নয়, উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের দোকান-পাটে ফুলের গাছ দিয়ে করেছেন দৃষ্টি নন্দন।
মাত্র ৭মাসে পুরো ভোলাহাটকে দিয়েছেন নতুন এক পরিচয়। শুধু সৌন্দর্য্যে শৌখিন নয় তিনি, মাদক, বাল্যবিয়ে, সন্ত্রাস, নাশকতা দমনে দিনরাত মাঠ-ঘাট চোষে বেড়িয়েছেন তিনি।
অন্যায়, ঘুষ-দূর্নীতিকে তিনি একবারের জন্যও ছাড় দেননি। তার কাজ-কর্ম, ধৈর্য্য, সহনশীলতা, একাগ্রতা তাকে ভোলাহাটবাসীর কাছে অল্পদিনেই খুব আপনজন ও আস্থাভাজন করে তোলে। সব্যসাচী এ অফিসার অল্পদিনেই উপজেলাবাসীর কাছে হয়ে উঠেন উন্নয়নের রূপকার, মানবতার এক মহানুভব প্রাণপুরুষ।
সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ভোলাহাটের সার্বিক উন্নয়নে দিনরাত যে ভাবে কাজ করছেন, তা অন্য যে কোন অফিসারের কাছে গ্রহনযোগ্য ও শিক্ষনীয়।
এমন নিরালস পরিশ্রমী অফিসারকে পরিবারের সদস্যদের কখন সময় দেন এবং বিশ্রাম কত ঘন্টা করেন-এমন প্রশ্ন করা হলে তার জবাবে তিনি বলেন, সরকার কাজ করার জন্যই তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। কাজ না করলে দেশের সাথে, জাতির সাথে প্রতারণা করা হবে।
ভবিষ্যত প্রজন্মকে সৃষ্টিশীল ও সৃজনশীল করতে না পারলে সুন্দর আগামী পাওয়া অসম্ভব। তিনি বলেন, পরিবারকে তেমন সময় দিতে পারি না, তাতে তারা বিরক্ত না হয়ে বরং সকলে আমাকে কাজ করার উৎসাহ দিয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে গেলে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে দেশের হয়ে কাজ করে যেতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় এর মাঠ প্রশাসন-২ শাখার প্রজ্ঞাপনে দেশের মোট ৫৭জন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি দেন।
এর মধ্যে ভোলাহাটের মশিউর রহমান সিরাজগঞ্জ জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হয়ে পদায়নের খবর আসে। তার পদোন্নতির খবর মুহূর্তে উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাবাসি আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন।
তবে কিছু খবর সামগ্রিকভাবে ভাল হলেও অনেকের জন্য তা মেনে নিতে কষ্টও হয়! সামগ্রিক ভালোর কথা ভেবে উপজেলাবাসি তার ভালোবাসা ও উন্নয়নে মুগ্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাতে থাকে।
উপজেলাবাসীর ভালবাসার দাবি ও দোয়া এই যে, তিনি যেন এরপর জেলা প্রশাসক হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এসে তার হাতে সাজানো উন্নয়নের ভোলাহাটকে দেখে যান।
উল্লেখ্য যে, তিনি ভোলাহাটের উন্নয়নে যে সফলতার স্বাক্ষর রেখে গেলেন, তা এর পূর্বে কেউ দেখাতে পারেননি। একটি মহল তাকে নিয়ে চক্রান্তে জড়াতে চাইলেও ভোলাহাটবাসীর ভালবাসা তাকে হেরে যেতে দেয়নি। তিনি যা করেছেন, তা আজীবন ভোলাহাটবাসী মনে রাখবেন।
সম্পাদক
এড. গৌরাঙ্গ বসু (ট্রিপল এম.এ)
প্রকাশক
সবুজ বালা
© ২০২৫ আলোকিত জনপদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত