ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর, ঘোষণা আচরণ বিধিমালা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়েছে। বিধিমালায় প্রার্থীদের আচরণ, প্রচারপদ্ধতি ও ভোটকেন্দ্রসংক্রান্ত একাধিক নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়েছে।
আচরণবিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সময় মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রতিটি প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচজন সমর্থকসহ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সংগঠনের বাধাদান নিষিদ্ধ।
ভোটার পরিবহন বা যানবাহন ব্যবহার করে শোডাউন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। তবে রিকশা বা সাইকেল ব্যবহার করা যাবে। প্রার্থীরা চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন থেকে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন। রাত ১০টার পর মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
ভোটার ও প্রার্থী ব্যতীত অন্য কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার চালানো যাবে, তবে তা হতে হবে ইতিবাচক ও আইনসম্মত। ব্যক্তিগত আক্রমণ, গুজব কিংবা মিথ্যা তথ্য প্রচার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
সভা বা সমাবেশ করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে অনুমতি নিতে হবে। প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ তিনটি প্রজেকশন মিটিং করার অনুমতি থাকবে। চিফ রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদিত স্থান ব্যতীত ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ বা মিছিল করা যাবে না। পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়—এমন স্থানে কোনো জনসভা, সমাবেশ বা মঞ্চ তৈরি নিষিদ্ধ।
নির্বাচনী প্রচারণায় কালি, চুন বা কেমিক্যাল দিয়ে দেয়াল লিখন কিংবা যানবাহনে লিখন/চিত্রাঙ্কন নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো দেয়াল, স্থাপনা, গাছ বা খুঁটিতে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। প্রচার সামগ্রীতে শুধু প্রার্থীর সাদাকালো ছবি ব্যবহার করা যাবে; অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ। নির্বাচনী প্রচারের সময় কোনো রকম খাবার, উপহার বা অর্থ বিতরণ করা যাবে না।
ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে ভোটারদের বৈধ হল পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। কেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ, এমনকি ছবি তোলাও নয়। ভোট দিয়ে অবিলম্বে ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করতে হবে, অপ্রয়োজনীয় ভিড় বা দীর্ঘসময় অবস্থান করা যাবে না।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য প্রার্থিতা বাতিল ও সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে বিধিমালায়।