বিধি বহির্ভুত ভাবে একজন জুনিয়র ( প্রশাসন ১৫ তম ব্যাচের ) কর্মকতাকে সচিবের রুটিন দায়িত্ব দিয়ে গত ৩১/১২/২৪ ইং তারিখ হতে অদ্য পর্যন্ত মন্ত্রণালয়় চালাচ্ছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিসেস ফরিদা আক্তার ।
সুত্র মতে রুটিন দায়িত্ব হল সাময়িক ভাবে দৈনন্দিন ডাক ফাইল দেখা এবং মন্ত্রণালয়ে়ের দৈনিক কাজ কর্ম মনিটরিং করার জন্য ঐ পদে কর্মকতা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা এবং সেটি সর্ব্বোচ ৮/১০ দিন। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে়। প্রায় ৬/৭ মাস যাবৎ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং আওয়ামী সরকারের সাবেক ১ জন সচিব ও ২ জন মন্ত্রীর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালনকারী আলোচ্য কর্মকতা,অতিরিক্ত সচিব তোফাজ্জল হোসেনকে (৬৩০৫) দিয়েই মন্ত্রণালয়ের স্বাভাবিক ফাইল ওয়ার্ক করাচ্ছেন উপদেষ্টা । এমনকি মো: তোফাজ্জল হোসেনকে সচিবের নিয়মিত দায়িত্ব প্রদানের জন্য ও সকল নিয়ম নীতি ভেঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে় বিগত ১৯/১/২৫ ইং তারিখে আধা সরকারী পত্র দিয়েছেন এ উপদেষ্টা । ঐ পত্রে অতিরিক্ত সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেনকে সচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় এবং পদোন্নতি প্রদানে বিলম্ব ঘটলে অন্য কোন সচিব সেখানে পদায়ন না দেয়ার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছিল যা প্রশাসনে এ যাবৎ কালের রেকর্ড ও নজিরবিহিন ঘটনা।
সুত্রটি জানায়, মো: তোফাজ্জল হোসেনকে দিয়ে উপদেষ্টা যে সকল অনিয়়ম করাতে পারছেন অন্য কোন নিয়মিত সচিব হলে তাকে দিয়ে কোন প্রকার অনিয়ম / দুনীতি করাতে পারবে না বলেই রুটিন দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম দুনীতি করা হয়েছে এই সচিবের মাধ্যমে । যার বেশ কয়েকটির অভিযোগ (এফএম ডি ভ্যাকসিন কেনাসহ) দুদুকে তদন্তের অপেক্ষায় রয়েছে ।
সর্বশেষ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ২ টি প্রকল্পে পিডি নিয়োগের জন্য রুটিন দায়ি়ত্বপ্রাপ্ত সচিবের সভাপতিত্বে সভা আহ্বান করা হয়েছে যা প্রশাসনিক ভাবে চরম অনিয়ম। জানা যায়, এখানে উপদেষ্টার নিজের পছন্দের লোককে পিডি নিয়োগ দেয়ার জন্যই এ অনিয়মটা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ২ টি প্রকল্পের ১ টিতে ডিডি মো: নজরুল ইসলাম এবং অপরটিতে ভিও ডা: মো: কাজী আশরাফুল ইসলামকে পিডি নিয়োগ দেয়ার লক্ষ্যে শুধু আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য সভা আহবান করা হয়েছে। এ দুজনের সাথে ইতোমধো মোটা অংকের আর্থিক লেন- দেন হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। ৬/৭ মাসে এ ধরনের বেশ কিছু পদোন্নতি এবং নিয়োগ ও বদলীও করা হয়েছে এই রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে়র বিগত ১৮/৪/২৩ ইং তারিখের প্রজ্ঞাপন নং- ০৫.০০.০০০০.১৭০.১১.০১৭.২১-৯৭ এর ১২ নং অনুচ্ছেদের ৪ নং ধারায় সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, “ সচিবের বিদেশ অবস্থান বা অন্য কোন কারনে সাময়িক সময়ের জন্য সচিবের দৈনন্দিন বা জরুরী সরকারী কায্যাদি সম্পাদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী তার নিজ পদের পদবী ব্যবহার করিবেন এবং উহার সহিত সচিবের ‘রুটিন দায়িত্ব’ শব্দ সমুহ যোগ করিবেন। তবে সাময়িক সময় বলতে নিশ্চয় ৬/৭ মাস নয়।
এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেন রুটিন দায়ি়ত্ব প্রাপ্তির পর হতে কোন সময় নিজের পদবী ব্যবহার করেন নি। তিনি বরাবরই সচিব (রুটিন দায়িত্ব) লিখে সাক্ষর করেন যা জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উক্ত প্রজ্ঞাপনের সম্পুর্ণ পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এখানে লক্ষ্যনীয় যে, মন্ত্রণালয়ের বিগত ১৫/৬/২৫ ইং তারিখের ২ টি পত্রে ২ টি প্রকল্পের পিডি নিয়োগ সংক্রান্ত সভার পত্রে পরিস্কার ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণায়ে়র সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেনের (রুটিন দায়ি়ত্ব) সভাপতিতে” ¡ কোথাও মো: তোফাজ্জল হোসেনের মুল পদবী অতিরিক্ত সচিব উল্লেখ নেই। আর আর্থিক বিধি অনুযায়ী পিডি নিয়োগের জন্য তিনি ক্ষমতা প্রাপ্ত নন।
রুটিন দায়িত্বের নামে একজন জুনিয়র কর্মকতা দিয়ে দীর্ঘদিন মন্ত্রণালয় চালনোর বিষয়ে় উপদেষ্টা মিসেস ফরিদা আক্তারের মতামত জানতে চেয়ে তার সেল নম্বরে একাধিক বার কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
বিষয়টি গুরুতর অনিয়ম বিধায় প্রধান উপদেষ্টা ও জনপ্রশাসন সচিবের পদক্ষেপ কামনা করেছেন মস্ত্রণালয়ের দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply