অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি হলে, নির্বাচন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আওতায় পড়বে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন, যেখানে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য ২,৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এই বরাদ্দ আগের তুলনায় কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ইসির জন্য ৪,১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যা পুরোটাই খরচ হয়েছে। তার আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) মূল বরাদ্দ ছিল ২,৪০৬ কোটি টাকা, যা পরে বাড়ানো হয়েছিল।

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। এজন্য নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে।

প্রস্তাবিত ২,৯৫৬ কোটি টাকার মধ্যে ২,৭২৭ কোটি রাজস্ব ব্যয় এবং ২২৯ কোটি উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, এই বরাদ্দ যথেষ্ট নাও হতে পারে। অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষ করে ইভিএম মেরামত ও নির্বাচনি সরঞ্জামাদির জন্য।

ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়েই নির্বাচন পরিচালনা হবে। অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে সরকার তা দেবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১,৯২৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, যা ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের দ্বিগুণ। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে (যেখানে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন) মাত্র ২৮২ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।

ইসি তাদের প্রাথমিক চাহিদা হিসেবে ৫,৪৮৫ কোটি টাকা চেয়েছিল, যার মধ্যে ৩,৯৫৪ কোটি টাকা জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন এবং ১,২৬০ কোটি টাকা ইভিএম মেরামতের জন্য। সেক্ষেত্রে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

এই ঘাটতি মেটাতে সরকার অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে পারে, অথবা জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে অনুদান বা ঋণ নেওয়া হতে পারে।

আলোকিত জনপদ