নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রাইড শেয়ারের মোটরসাইকেলচালক শাহপরান (৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩১ মে) মধ্যরাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল রবিবার দুপুরে নরসিংদী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেশকাত ইসলামের আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শাহপরান। বিষয়টি সোমবার (২ জুন) নিশ্চিত করেন পলাশ থানার ওসি মো. মনির হোসেন।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৮ মে ২০২৫ তারিখ বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকার মিরপুর-১২ নম্বর থেকে শ্যামলীর উদ্দেশ্যে রাইড শেয়ার মোটরসাইকেল ভাড়া করে রওনা দেন ২৬ বছর বয়সী ওই নারী। যাত্রার শুরুতে চালকের দেওয়া হেলমেট পরে গন্তব্যের কথা জানান। কিন্তু এরপর থেকে কিছু মনে নেই তার। জ্ঞান ফিরলে দেখতে পান নিজেকে একটি অজানা খোলা জায়গায়, অন্ধকারের মধ্যে। তার সঙ্গে চালক ছাড়াও আরও দুজন অপরিচিত ব্যক্তি ছিল। সেসময় তাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয় এবং ভিডিও ধারণ করা হয়।
ভয়াবহ এই ঘটনার স্থান মিরপুর-১২ থেকে শুরু হয়ে নরসিংদীর পলাশ থানার ঘোড়াশাল এলাকার আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন একটি কালভার্টের নিচের নির্জন স্থানে গিয়ে শেষ হয়। ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের পর ভুক্তভোগীর সব টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় চক্রটি। পরে নারীর গলায় ছুরি ধরে তার পরিবারের সদস্যদের ফোন করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে। এরপর নগদ অর্থ ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে পালিয়ে যায় তারা।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারীর চাচা ৯৯৯-এ ফোন করলে পলাশ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে ওই নারী বাদী হয়ে শাহপরানকে প্রধান আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনকে সহযোগী আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযানে নামে।
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন। এরপর শনিবার মধ্যরাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে শাহপরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কেরানীগঞ্জ থানাধীন তারানগর বটতলী (দক্ষিণ পাড়া) এলাকার মৃত আব্দুল আলীর ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহপরান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। অন্য আসামিদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।” এছাড়া রাইড শেয়ার ব্যবহার করার সময় বিশেষত নারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
পলাশ থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, “শাহপরান আদালতে হাজির হয়ে নারী যাত্রীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।”
এভাবেই পুরো ঘটনার একটি ধারাবাহিক ও সাবলীল বিবরণ প্রস্তুত করা হলো। চাইলে আরো সংক্ষেপ বা বিস্তারিত করতে বলুন!
Leave a Reply