হঠাৎ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। শরীরের জন্য কিছুটা কোলেস্টেরল প্রয়োজন হলেও অতিরিক্ত কোলেস্টেরল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুযায়ী, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ যদি ২০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তার বেশি হয়, তাহলে সেটিকে উচ্চ কোলেস্টেরল ধরা হয়। নিচে এমন ছয়টি কারণ দেওয়া হলো, যেগুলোর ফলে হঠাৎ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
১. অতিরিক্ত কফি পান
দীর্ঘদিন ধরে দিনে চার কাপ বা তার বেশি কফি পান করলে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে এসপ্রেসো ধরনের কফিতে থাকা ‘ডিটারপিন’ নামক উপাদান কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তাই যারা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই ধরনের কফি কমানো উচিত।
২. মানসিক চাপ
দীর্ঘ সময় মানসিক চাপের কারণে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো ভালো।
৩. ধূমপান
সিগারেটের নিকোটিন শরীরের ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) কমিয়ে খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) বাড়ায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান ত্যাগ করাই সবচেয়ে কার্যকর।
৪. কিছু ওষুধ
কিছু ওষুধ যেমন অ্যামিওডারোন, ডায়ুরেটিক, রেটিনয়েড, নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ও ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।
৫. গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই কোলেস্টেরলের মাত্রা ৩০-৪০ শতাংশ বেড়ে যায়। তবে অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ‘জেস্টেশনাল হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া’ নামে পরিচিত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, যা চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
৬. দ্রুত ওজন কমানো
খুব দ্রুত ওজন কমানোর সময় কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্থায়ীভাবে বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে কেটোজেনিক ডায়েটের ক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে। তাই ওজন কমানোর জন্য ধীরে ধীরে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা ভালো।
স্বল্পমেয়াদী কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে করণীয়
স্বল্প সময়ের জন্য কোলেস্টেরল বাড়লে তা সবসময় বিপজ্জনক না হলেও, এটি কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা বা অভ্যাসের সংকেত হতে পারে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। উচ্চ কোলেস্টেরল শুধুমাত্র রক্ত পরীক্ষা করেই নির্ণয় করা যায়। কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
সারাংশ:
কফি, ধূমপান, মানসিক চাপ, কিছু ওষুধ, গর্ভাবস্থা এবং দ্রুত ওজন কমানো হঠাৎ কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
Leave a Reply