সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তে দায়ের করা নয়টি মামলা থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ভিডিওটিতে আরও বলা হয় যে, মামলার পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের আইন বিভাগ কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় আদালত এই অব্যাহতি দিয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক
তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই এবং ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর একটি প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রেকর্ডে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা রয়েছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করার পর দেখা গেছে, যে কোর্টরুমটি প্রদর্শিত হয়েছে সেটি আসলে আন্তর্জাতিক আদালত, অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। কোর্টরুমের ডেস্কে স্পষ্টভাবে ‘International Court of Justice’ লেখা রয়েছে। তাই এটি কোনো অপরাধমূলক মামলার বিচার নয়, বরং একটি উপদেষ্টা শুনানির অংশ।
মূলত, এই ভিডিওটি সুইস কনফেডারেশনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনি ব্যাখ্যা উপস্থাপনের একটি অংশ, যা ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘Dawn News English’-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়। ভিডিওতে সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধি ফ্রাঞ্জ পেরেজ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের আইনি মূল্যায়ন করছেন। ভিডিওতে শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশের কোনো আলোচনা নেই।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক আদালত আইসিজে-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগের তথ্য পাওয়া যায়নি। আইসিজে-এর চলমান ও স্থগিত মামলার তালিকা পর্যালোচনা করেও এমন কোনো মামলা শনাক্ত হয়নি।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্স’ এর ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তে একটি তদন্ত আবেদন করেন। তবে এটি এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মামলা হিসেবে গৃহীত হয়নি।
অতএব, ‘আইসিসিতে দায়ের করা ৯টি মামলায় শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে’ শিরোনামের ভিডিও এবং সেই সাথে করা দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
Leave a Reply