সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব সৌন্দর্যের জন্য খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ঈদের দিনে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য পর্যটক ও দর্শনার্থী। সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে সৈকতে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ঈদের দীর্ঘ ছুটিকে কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ছুটে আসছেন কুয়াকাটায়।
সকাল থেকেই শুঁটকি পল্লী, গঙ্গামতির সৈকত, রাখাইন পল্লী, ইকোপার্ক, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন ও সৈকতের ঝাউবাগানে পর্যটকদের প্রাণবন্ত পদচারণা লক্ষ করা যায়। আগত পর্যটকরা সমুদ্রের নোনা জলে স্নান করে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। কেউ সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত, কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা ছাতার নিচে বসে ঢেউয়ের গর্জন উপভোগ করছেন, আবার অনেকে ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকত ঘুরে দেখছেন।
খুলনা থেকে পরিবারসহ কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক সজল দাস বলেন, “আমি পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় এসেছি। গতকাল তেমন ভিড় ছিল না, কিন্তু আজ সৈকত ভরে গেছে পর্যটকে। পরিবেশটা সত্যিই উপভোগ্য।”
রমজান মাসজুড়ে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা তুলনামূলক কম থাকলেও, ঈদের ছুটিতে পর্যটন স্পটগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ফলে পর্যটন ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
হোটেল ডি মোন’র ব্যবস্থাপক জয়নুল আবেদীন জুয়েল জানান, “ঈদ উপলক্ষে আমাদের হোটেলের ৬০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। ছুটির এই মৌসুমে ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, পুরো মাসজুড়েই পর্যটকদের উপস্থিতি ভালো থাকবে।”
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম বলেন, “অনেক দিন পর কুয়াকাটায় এত পর্যটকের সমাগম দেখা যাচ্ছে। সৈকত এখন পর্যটকদের কোলাহলে মুখর।”
কুয়াকাটার পর্যটন খাতে কর্মরত প্রায় ১৬টি পেশার মানুষ এ সময় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত থেকে তারা নিজেদের রোজগারও নিশ্চিত করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, “ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা ছয়টি টিম নিয়োজিত করেছি। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে, তাই ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
Leave a Reply