হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর, প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ীদের বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানী শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘জনতার জবাব’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২২টি হামলার ঘটনা তুলে ধরা হয়। সংগঠনের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, এর মধ্যে ১২০টি ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়া সংগঠিত হয়েছে। তারা সরেজমিনে গিয়ে এসব হামলার তথ্য সংগ্রহ করেছেন, এবং খুলনা বিভাগে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ এখনও চলছে। তথ্য সংগ্রহ সম্পন্ন হলে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করবেন।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী অন্তু রায় বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় রাজনৈতিক তকমা লাগানো হয়। এজন্য তারা সরেজমিনে গিয়ে অরাজনৈতিক হামলার তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার হামলার শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করুক, যাতে আসন্ন দুর্গাপূজায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো শান্তিতে উদযাপন করতে পারে।”
এর আগে, একই স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আট দফা দাবিতে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন অন্তু রায়, বকুল বর্মন, সুস্মিতা কর, সুকান্ত বর্মন, বনমালী বর্মন, উজ্জ্বল সিনহা, দীনা বর্মন, লিঙ্কন দত্তসহ অন্যান্যরা।
সংগঠনটির আট দফার মধ্যে রয়েছে: সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারে ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’ গঠন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন’ বাস্তবায়ন, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ, ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ড’ আধুনিকীকরণ, এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিনের ছুটি প্রদান।
সম্পাদক
এড. গৌরাঙ্গ বসু (ট্রিপল এম.এ)
প্রকাশক
সবুজ বালা
© ২০২৫ আলোকিত জনপদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত