নারী ভাড়াটিয়ার বেডরুম এবং বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল, যা গোপনে সবকিছু রেকর্ড করছিল। বাথরুম ও বেডরুমে লুকানো ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলছিল, কিন্তু একসময় ভাড়াটিয়া সেটি খুঁজে পান।
অভিযুক্তের সন্দেহজনক আচরণই তার কুকীর্তি ফাঁস করে দেয়। এই ঘটনার জন্য ৩০ বছর বয়সী বাড়ির মালিকের ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকম এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নারী ভাড়াটিয়ার ভাড়া নেওয়া এই অ্যাপার্টমেন্টে গোপন ক্যামেরা পাওয়ার ঘটনাটি বিভিন্ন শহরে একাকী বসবাসকারী নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বেআইনিভাবে ভাড়াটিয়ার অ্যাপার্টমেন্টে গোপন ক্যামেরা বসানোর অভিযোগে দিল্লি পুলিশ ইতোমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশের তথ্যে জানা গেছে, অভিযুক্তের নাম করণ, এবং সে তিন মাস আগে ওই নারীর বেডরুম ও বাথরুমে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। এই ঘটনা পূর্ব দিল্লির শকরপুর এলাকায় ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের এক যুবতী ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দিল্লির শকরপুরে বাড়ি ভাড়া নেন। যেই অ্যাপার্টমেন্টে তিনি থাকতেন, তার উপরের তলায় বাড়ির মালিকের স্ত্রী ও ছেলে থাকতেন। তাদের ভালো আচরণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার তাকে বাড়ি যাওয়ার সময় চাবি দিয়ে দেওয়ার জন্য ভরসা দিয়েছিল।
তবে উত্তর প্রদেশ থেকে ফিরে যুবতী কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও, তার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক গতিবিধি দেখা দেয়। তখন তিনি 'লিঙ্কড ডিভাইস' চেক করে একটি অজানা ল্যাপটপের সঙ্গে তার হোয়াটসঅ্যাপ সংযুক্ত আছে এমনটি দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ল্যাপটপ থেকে লগ আউট করে দেন।
এই ঘটনার পর তার মনে সন্দেহ জাগে যে কেউ তার উপর নজর রাখছে। বাড়িতে তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর সে লক্ষ্য করে, বাথরুমের লাইট বাল্বটি কিছুটা ব্যাঁকা অবস্থায় আছে। বাল্বটি খুলতেই সে দেখতে পায় ভেতরে একটি ক্যামেরা রয়েছে। এক মুহূর্তও নষ্ট না করে যুবতী পুলিশে ফোন করে। পরে পুলিশ এসে আবার তল্লাশি চালায় এবং এবার যুবতীর বেডরুমের লাইট বাল্বের হোল্ডার থেকেও একটি ক্যামেরা উদ্ধার করে।
পুলিশ যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চায়, তার অ্যাপার্টমেন্টে কারা যাতায়াত করত। ভুক্তভোগী যুবতী জানান, তিনি প্রায়শই বাড়ির মালিকের ঘরে চাবি দিয়ে যেতেন। এরপরই পুলিশ বাড়ির মালিকের ছেলেকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকার করে, তিন মাস আগে যুবতী যখন বাড়িতে ছিলেন, তখন সে তার ঘরে ঢুকে বেডরুম ও বাথরুমে ক্যামেরা লাগিয়ে আসে। ক্যামেরাগুলোতে মেমরি কার্ডও ছিল। যখন মেমরি ফুল হয়ে যেত, তখন সে বিদ্যুতের কাজের নামে ওই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে রেকর্ডিংগুলো নিজের ল্যাপটপে ট্রান্সফার করে ফাঁকা মেমরি কার্ড লাগিয়ে আসত।
এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে, যেখানে যুবতীর একাধিক নগ্ন ভিডিও পাওয়া গেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সম্পাদক
এড. গৌরাঙ্গ বসু (ট্রিপল এম.এ)
প্রকাশক
সবুজ বালা
© ২০২৫ আলোকিত জনপদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত