মালিক পক্ষ পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে দেশের চলমান শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষিতে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের যৌথ বিবৃতির অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য জানান।
শ্রম সচিব বলেন, পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ বিরাজমান রয়েছে। এ অসন্তোষ নিরসনে ১৮ দফা দাবি নিয়ে শ্রমিক ও মালিকরা ঐক্যমতে পৌঁছেছেন। বিগত সরকারের সময় শ্রমিকদের দাবি দমিয়ে রাখা হয়েছে, কিন্তু ধীরে ধীরে সকল ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে।
শ্রমিক নেতারা জানান, তারা তৈরি পোশাক শিল্পে অসন্তোষ বাদ দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছেন। শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এর আগে পোশাক শিল্পে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে ৪ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শ্রমিক নেতা ও মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে এই সমঝোতা অর্জন করা হয়।
পোশাক শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো:
১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।
২. ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি যেসব কারখানায় বাস্তবায়ন করা হয়নি, তা দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।
৪. চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে অথবা চাকরিচ্যুত হলে, পাঁচ বছরের চাকরির পর একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট শ্রম আইনের ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে।
৫. সব ধরনের বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
৬. হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সব কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে।
৭. সব কারখানায় প্রভিডেন্ট ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৮. বেতনের ক্ষেত্রে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট কমপক্ষে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা উচিত।
৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।
১০. বিজিএমইএ-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং নিষিদ্ধ করতে হবে; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের কর্তৃত্বে থাকতে হবে।
১১. সব ধরনের হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা উচিত।
১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে যথাযথ তদন্ত শেষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সকল কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে।
১৭. অন্যায়ভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা উচিত।
১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে।
Leave a Reply