পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিরতা ফিরিয়ে আনার জন্য সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তারা বলেন, পার্বত্য এলাকায় চলমান অস্থিরতাকে বাইরের আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। অস্থিরতা দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলের নিরীহ বাঙালি ও উপজাতি সবাই আমাদের ভাই-বোন, এবং তাদের মধ্যে সমঝোতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা জরুরি।
নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন, পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আমাদের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। বাংলাদেশবিরোধী পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দমন করতে হবে। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও সহায়তা করবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবের ‘বাঙালি পরিচয়’ চাপিয়ে দেওয়ার ফলে পাহাড়ে অশান্তি শুরু হয়। তবে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশি জাতীয়তার গ্রহণের মাধ্যমে উপজাতিরা আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে মুক্তি পায়। আমাদের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় স্বীকার করে এবং কোটাব্যবস্থার মাধ্যমে পাহাড়ি উপজাতিদের মূলধারার সমাজে যুক্ত করার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু পাহাড়ি বাঙালিরা সুবিধাবঞ্চিত।
এছাড়া, তারা দাবি করেন, পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসী বলে কিছু নেই। ইতিহাস অনুযায়ী, এই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো প্রায় ২৫০-৩০০ বছর আগে বাইরের অঞ্চল থেকে এখানে এসেছে। ১৯৯৭ সালে তাদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, কিন্তু পার্বত্য অঞ্চল কখনো বাঙালিদের ‘উপনিবেশ’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানানোর একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে, যেখানে বিভিন্ন খ্রিষ্টান মিশনারি সক্রিয়। কিছু এনজিওও এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ‘আদিবাসী’ প্রচারণায় লিপ্ত। তারা দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন, সেনা-জনতা এই ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়িত হতে দেবে না এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোনো চক্রান্ত মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
Leave a Reply