নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে মদনপুর থেকে ধউরপর্যন্ত চলাচলকৃত আসমানী পরিবহন বিএনপির নেতা মাজহারুল ইসলাম হিরুনের ছত্রছায়া আওয়ামী নেতা ফেরদৌস ভূইয়াঁ রুবেল নামে এক পরিবহন চাদাঁবাজ বিএনপি ও আওয়ামী বাহিনী নিয়ে হামলা করে দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এসময় তারা আসমানি পরিবহন পরিচালকদের জিম্মি করে দেড় থেকে তিন লক্ষ টাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে নেয়। ঘটনাটি ঘটেছে মদনপুর বিএনপির নেতা মাজহারুল ইসলাম হিরুনের আস্তানা দেওয়ানবাগ ও আসমানি পরিবহনের ডিপোতে।

আসমানী পরিবহনের পরিচালনা কমিটির আহবায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে আসমানি পরিবহনটি মদনপুর থেকে তারাব, ডেমরা-ষ্টাফ কোর্য়াটার, রামপুরা, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও ধউর পর্যন্ত চলাচল করছে। শুরুতে এ কমিটির পরিচালনার প্রধান ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ডেমরা ৭০ নং ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াছ কাঞ্চন নামে আসমানিরই একজন পরিবহন মালিক। পরবর্তীতে তাকে হটিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আসমানি পরিবহনের একক নিয়ন্ত্রন নিয়ে বেপরোয়া চাদাঁবাজি শুরু করেন আওয়ামী লীগের আরেক নেতা ফেরদৌস ভূইয়াঁ রুবেল। রুবেলের পক্ষে চাদাঁ আদায় করতেন হীরু ও বাশার নামে দুই পরিবহন চাদাঁবাজ।

তাদের চাদাঁবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পরিবহন মালিকরা র‌্যাব-১১তে অভিযোগ দিলে ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর র‌্যাব অভিযান চালিয়ে চাদাঁবাজির টাকাসহ হাতেনাতে বাশারকে আটক করে। এসময় হীরু পালিয়ে যায়। র‌্যাব বাদি হয়ে বাশার ও হীরুর বিরুদ্ধে চাদাঁবাজি মামলা করে। এরপরও থামেনি এমপি সজল মোল্লার ডাইন হাত আওয়ামী লীগ নেতা রুবেলের চাদাঁবাজি।

পরবর্তীতে আসমানি পরিবহন মালিকরা কুখ্যাত চাঁদাবাজ রূবেলের বিরুদ্ধে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিতে অভিযোগ দিলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কুখ্যাত রূবেলের চাদাঁবাজি সত্যতা পেলে আসমানী পরিবহন পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালে মার্চ মাসে সাধারণ মালিকদের পক্ষ থেকে মোঃ রফিকুল ইসলামকে আহবায়ক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি করে দেয়া হয়। নতুন কমিটি গঠনের ৪দিন পর কুখ্যাত পরিবহন চাঁদাবাজ রুবেল আরেক চাদাঁবাদ মনোয়ার তাদের বাহিনী নিয়ে ডেমরায় ষ্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আসমানী পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা তাদের রুখে দেয়।

এরপর থেকে আসমানী পরিবহনটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছিল। এ বছরের জুলাই মাসে কুখ্যাত পরিবহন চাঁদাবাজ ও আওয়ামী লীগের নেতা রুবেল বর্তমান কমিটিকে কোন নোটিশ না করিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এক তরফা একটি রায় আনে। এরপর বর্তমান কমিটি আদলতে গিয়ে তাদের কাগজপত্র দাখিল করলে আদালত রুবেলের রায়ের উপর স্থিতাবস্তা জারি করেন। আদালতের রায় উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগ নেতা ও পরিবহন চাদাঁবাজ রুবেল জুলাই মাসের ৯ তারিখে ডেমরার আওয়ামীলীগ সর্মথিত সাবেক এম, পি সজল মোল্লার লোকজন নিয়ে পুনরায় আসমানী পরিবহন দখলে নিতে চেষ্টা করে।

এসময় প্রতিবাদ করলে বর্তমান কমিটির আহবায়ক মো: রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজনের উপর হামলা করলে রফিকুল ইসলামসহ আরও ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এখন চাঁদাবাজ ও আওয়ামী লীগ নেতা রূবেল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় অভিযোগ দিলেও রূবেল আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় সেই মামলা রুজু হয়নি। আসমানী পরিবহন পুনরায় দখলে নিতে সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ মদনপুর বন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম হিরুনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা কুখ্যাত পরিবহন চাঁদাবাজ রুবেল সশস্র বাহিনী নিয়ে পরিবহনটির মদনপুর ডিপোতে হামলা করে দখলে করেন।

এসময় আসমানী পরিবহনের পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ নিজাম ও মোঃ আকরামকে জিম্মি করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে দেড় থেকে তিন লক্ষ টাকা আদায় করে তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম হিরুন ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদিকুর রহমান সাদেক, মদনপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মামুন, মাহাবুব, শানুদের ছত্রছায়ায় কুখ্যাত পরিবহন চাঁদাবাজ আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল তার বাহিনী নিয়ে আসমানী পরিবহন দখল করে চাদাঁ আদায় করছে। আর এ কারণে এ পরিবহনটিতে চলছে চরম উত্তেজনা। যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী ও প্রাণ নাশের ঘটনা। এ ব্যাপারে রূবেল ও তার বাহিনী বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে বিষয়টি সেনাবাহিনীকেও অভিহিত করা হয়েছে।

পরিবহন সাধারন মালিকদের অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম হিরুন, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদিকুর রহমান সাদিক ও মদনপুর যুবদলের সভাপতি মামুন পরিবহন সাধারণ মালিকদের কে জিম্বি করে দুই লক্ষ টাকা নিয়েছে। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম হিরুন ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদিকুর রহমান সাদিক, মদনপুর যুবদলের সভাপতি মামুনকে ফোন দিলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। চলবে.!