বান্ধবীর বিয়েতে পরিচয় অতঃপর প্রেম। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মাদারীপুর থেকে ৯ম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে নেয়া হয় রাজধানীর দক্ষিন কেরানীগঞ্জে। শিক্ষার্থীকে দুইদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বখাটের বিরুদ্ধে। পরে মারধর করে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এই ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমশি করছে পুলিশ। অভিযুক্ত আল আমিন সরদার রাজধানী ঢাকার কদমতলীর শ্যামপুর এলাকার জুয়েল সরদারের ছেলে। কাজের সুবাধে আল আমিন দক্ষিন কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া বসবাস করে।
স্বজনরা জানায়, ৮ মাস আগে বান্ধবী কাজলের বিয়েতে তার মামাতো দেবর আল আমিন সরদারের সাথে পরিচয় হয় ৯ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর। পরে ওই যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। গত বৃহস্পতিবার বান্ধবীর ফুফু মালা বেগম পরিবারকে না জানিয়েই ওই শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় নিয়ে যায়। পরে আল আমিন বিয়ের আশ^াস দিয়ে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ নির্যাতিতার। পরে মেয়েটিকে বেদম মারধর করে আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয় শিক্ষার্থীকে। বাড়ি এসে পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে শনিবার রাতে নির্যাতিতাকে ভর্তি করা হয় মাদারীপুরের জেলা সদর হাসপাতালে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমশি করছে মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্যাতনের দৃশ্য মনে পড়লেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ভয় আর আতঙ্কে কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। মিথ্যে বিয়ের আশ^াসে এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
নির্যাতিতা মেয়েটি জানায়, কাজলের ফুফু প্রথমে কাউকে কিছু না বলেই শিক্ষার্থীকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে বিয়ের নাটক করে আল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। পরে মেয়েটিকে নিয়ে আল আমিন একটি রুমে আটকে শারিরিক ও পাশবিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে মারধর করে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনার বিচার দাবি করেছে নির্যাতিতা ওই শিক্ষার্থী।
মেয়েটির বাবা জানায়, একবার মাদারীপুরের পুলিশ বলে ঢাকায় গিয়ে মামলা করতে। আমরা গরীব মানুষ, কিভাবে ঢাকায় গিয়ে মামলা করবো। ঘটনার শুরুতো মাদারীপুর থেকে হয়েছে। এখানে কেন মামলা নিবে না। এর বিচার কি পাবো না।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হওয়ায় এ ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমশি করছে মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। অপরদিকে ঘটনাস্থলের শুরু মাদারীপুরে হওয়ায় সেখানেই মামলা করতে হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ তো দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে। মাদারীপুরে ধর্ষণের ঘটনা না হওয়ায় এখানে মামলা নেয়ার সুযোগ নেই। প্রেমের সম্পর্কের পর এমন ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জেই মামলা করতে হবে।
ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুমুর রশীদ মুঠোফোনে বলেন, ঘটনার শুরু যেখানে, সেখানেই মামলা করতে হবে। মাদারীপুরে মামলা হলে আমরা আসামী ধরে সহযোগিতা করবো। এখানে মামলা হবার কোন সুযোগ নেই।
Leave a Reply