রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সবজির দামে স্বস্তি, চড়া ডিম মুরগির বাজার বিডিআর বিদ্রোহের দিন কী ঘটেছিল, জানালেন সাবেক সেনাপ্রধান মইন জাতিসংঘ অধিবেশনে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হচ্ছেন যারা ৫ আগস্টের পর আরেকটি দল লুটের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে: ফয়জুল করীম লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কোটালীপাড়ায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তিতে রংপুরে শহীদি মার্চ পালন ডিএমপির ১১ উপপুলিশ কমিশনারকে বদলি সচিবদের যেসব নির্দেশনা দিলেন ড. ইউনূস যে কারণে আরএকে সিরামিকের ত্রাণের ১০ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিল বিএনপি

বাহুবলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা ! নামেই ৫০ শয্যা, বাস্তবে নেই

নাজমুল ইসলাম হৃদয়, বাহুবল
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৫১ Time View

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

দ্রুত সংকট সমাধান করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা চালুর দাবি উপজেলাবাসীর। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় আড়াই লাখের বেশি বাসিন্দার জন্য সরকারি একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্র এটি।  ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ চিকিৎসা কর্মকর্তা থাকার কথা ২৬ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক পদই শূন্য।

২৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালটিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র অল্প কজন চিকিৎসক।  সার্জারি, মেডিসিন, অ্যানেসথেসিয়া, শিশু, নাক-কান-গলা, গাইনি, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, অর্থোপেডিকসের কোনো চিকিৎসক নেই।

ফলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। এছাড়া অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ফার্মাসিস্ট, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট, কার্ডিওগ্রাফার, ইমার্জেন্সি অ্যাটেনডেন্ট, ওয়ার্ডবয়, মালি, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদ শূন্য রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

আর এতে প্রকৃত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ। দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকেও কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এমনই অভিযোগ বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের। এছাড়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় অপরিচ্ছন্ন বেশির ভাগ জায়গা। রোগীরা বলেন, ডাক্তার নাই।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নাই। এছাড়া খুবই নোংরা পরিবেশে স্বাস্থ্য সেবা নিতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট, জুনিয়র মেডিসিন কনসালটেন্ট, জুনিয়র গাইনি কনসালটেন্ট পদ। হাসপাতালটিতে হয় না কোন অস্ত্রোপচার। টেকনিশিয়ানের অভাবে সিবিসি, ব্লাড গ্রুপিং এবং ইউরিন টেষ্ট ছাড়া হয় না কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এছাড়াও রয়েছে সুপেয় পানি ও ওষুধের সংকট।

রয়েছে অক্সিজেনের সংকট। অবশ্য আর্থিকভাবে সচ্ছলরা চিকিৎসা না পেয়ে রোগী নিয়ে অনত্র চলে যেতে পারলেও গরিব-অসহায় রোগীরা চিকিৎসক না পেয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ১০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকেন প্রায় শতাধিক রোগী।

অধিকসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন মাত্র কয়েকজন চিকিৎসক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসকের আরও বেশকিছু পদ রয়েছে।

যার মধ্যে অনেক পদই শূন্য। ফলে জনবল সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে  বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।  ৫০ শয্যায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৭ বছর পার হলেও বাড়েনি জনবল ও আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা। রোগীর স্বজনরা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তার না পেয়ে রোগীদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়।

ডাক্তার না পেয়ে অনেকেই তাদের রোগী হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালসহ অনত্র নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যাও কম। ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। চিকিৎসার মানোন্নয়নে হাসপাতালের সব বিভাগে ডাক্তার নিয়োগের জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দ্রুত সংকট সমাধান করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা চালুর দাবি উপজেলাবাসীর।

চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, নোংরা পরিবেশ ও বেড সংকটের কারণে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা প্রশ্নবিদ্ধ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা নামে মাত্র সরকারি হাসপাতাল।

এ হাসপাতালে কর্মরত সেবিকাদের ব্যবহার খুবই খারাপ। হাসপাতালটিতে হয় না কোন অস্ত্রোপচার। টেকনিশিয়ানের অভাবে সিবিসি, ব্লাড গ্রুপিং এবং ইউরিন টেষ্ট ছাড়াও হয়না কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এছাড়াও রয়েছে সুপেয় পানি ও ওষুধের সংকট। রয়েছে অক্সিজেনের সংকট। সময় মতো মিলেনা ডাক্তার।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. বাবুল কুমার বলেন, জনবল সংকটের কারণে খুব সমস্যায় আছি। বিশেষ করে চিকিৎসক সংকটে সমস্যা বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইনডোর-আউটডোরে রোগীর চাপ অনেক বেশি।  দ্রুত হাসপাতালটিতে জনবল নিয়োগ না দিলে চরম বিপাকে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category