নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাবু সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এক বিবৃতিতে বলেন- করোনা মহামারি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও সংকট সৃষ্টি করেছে। উন্নত দেশগুলো অনুকূল অবস্থায় থাকার পরেও তারা হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, প্রতিকূল অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্যতা-দক্ষতা-মেধা-পারদর্শীতার কারণে আমরা সহনশীল পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পাশাপাশি দলকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানবকল্যাণে যেধরনের কাজ করেছে, দলও সেই রকমের কাজগুলো করার চেষ্টা করেছে। সাত কোটি পরিবারকে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে এবং এককোটি লোককে রেশন কার্ডের আওতায় আনা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরল দৃষ্টান্ত হলো, পঞ্চাশ লাখ লোককে আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক কোটি পঁচিশ লাখ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবং দশ কোটি টাকার অধিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটা এলাকায়, যারা মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত, যারা চাইতে পারে না, নেত্রীর নির্দেশে আমাদের নেতাকর্মীরা রাতের অন্ধকারে সেই তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে, যারা চাইতে পারে না তাদের বাড়িতে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেশব্যাপী দেওয়া হয়েছে টেলিমিডিসিন সেবা। প্রায় একশ’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টেলিমেডিসিন টিমের সদস্য, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে আমরা এই ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও সহযোগী সংগঠনগুলোর উদ্যোগেও পর্যাপ্ত পরিমাণ টেলিমেডিসিন টিম চালু করা হয়। শুরু করোনা না, বিভিন্ন চিকিৎসার সমস্যায় যারা পড়েছিল, মানুষ যাতে সেই চিকিৎসা পেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বঙ্গমাতার জন্মদিনে মহামারির মধ্যে যেসব ডাক্তাররা নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছে, রোগীদের পাশে সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই পাঁচশ’ চিকিৎসককে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছি। যুগে যুগে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হরো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। এটা সবসময়ই করছে আওয়ামী লীগ। এর আগেও আমাদের প্রিয় নেত্রী যখন বিরোধী দলে ছিলেন, ৮৮ এর ভয়াবহ বন্যার সময় মারাত্মকভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বিরোধীদরে থাকা সত্ত্বেও নেত্রী যেখাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
আমাদের দলের নেতারা, যার যেখানে সামর্থ্য আছে, সেখানে ভেন্টিলেটর স্থাপন করে দিয়েছে। আমাদের সাধারণ সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদের এমপি তার নির্বাচনি এলাকা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দুটি ভেন্টিলেটর স্থাপন করে দিয়েছেন। আমরা ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির পক্ষ থেকে সারা দেশে দশ লাখ মাস্ক বিতরণ করেছি। এক লাখের অধিক উন্নত মানের পিপিই দিয়েছি। যখন পিপিউ এর সংকট ছিল সেই সময়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এসব পিপিই মাস্ক সরবরাহ করেছি। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে আমরা দুটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়েছি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজও দুটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়েছি। যেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট আছে, সেখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা-অক্সিজেন আমরা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেেকটা মেডিক্যাল কলেজে আমরা সে ব্যবস্থা করেছি। জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে আমরা অক্সিজেন কনসেনট্রেটর এবং ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল থার্মোমিটার, অ্যান্টিসেপটিকসহ প্রয়োজনীয় উপকরন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। উপজেলা হাসপাতালগুলোতেও বিশেষ করে যেসব এলাকা রিস্ক জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেসব এলাকায় আমরা করোনা প্রতিরোধকসামগ্রী পাঠিয়েছি।
ভবিষ্যতে করোনার যে দ্বিতীয় ওয়েব আসতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আমার সে অনুযায়ী প্রস্তুত আছি। আঞ্জমান মফিদুলে পর্যাপ্ত সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের দাফন-কাফন কমিটি আছে সারাদেশে, আমরা ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেখানেও পিপিই পাঠিয়েছি। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন করবস্থান ও শ্মশান কমিটিতেও উন্নতমানের পিপিই ও প্রতিরক্ষাসামগ্রী দিয়েছি। তিনবার দুর্যোগ এসেছে, আম্পান এসেছে, এগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য দল অতন্দ্রপ্রহরীর মতো কাজ করেছে। যেখানে বন্যাকবলিত এলাকা, সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তা অব্যাহত আছে। পুনর্বাসনের কাজ আমরা ও সহযোগী সংগঠনগুলো করছে। বিশেষ করে বন্যায় সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও সহায়তা পাঠানো হয়েছে। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির পক্ষ থেকেও আমরা ত্রাণ ও শুকনো খাবার এবং সুরক্ষাসামগ্রী পাঠিয়েছি। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, বিশ্বকে বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা শিখতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আদর্শ রেখে গেছেন আমাদের জন্য, সেই আদর্শ বুকে লালন করে, তিনি যেমনিভাবে বাংলার মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন এবং সেই ভালোবাসা কোনোদিন পরিমাপ করা যায় না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন- মানুষকে ভালোবাসতে হবে, বিপদে আপদে মানুষের পাশে থাকতে হবে, এবং ভালোবাসা দিয়েই মানুষের মন জয় করতে হবে। আমরা এবার মানবিক কল্যাণে নেত্রীর জন্মদিনটাকে উৎসর্গ করেছি, আমরা সেখানে প্রায় পনের-সাড়ে পনের হাজার শীত মৌসুমের বীজগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আওয়ামী লীগ সবসময় দুর্দিনে মানুষের পাশে ছিল, মানুষের পাশে আছে, মানুষের পাশে থাকবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হোক জননেত্রী শেখ হাসিনার।
Leave a Reply