ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় নড়াইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রন কক্ষ। যে কোন প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় নড়াইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪৮ মেট্টিক টন চাল, প্রতি উপজেলায় দুইলক্ষ নগদ টাকা, লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া এলাকায় দুইটি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহুতল বভন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা এবং ৪৬ মেট্টিক টন চাল মজুদ রয়েছে জেলা প্রশাসনের অধিনে। এদিকে আগামী বুধবার (২৬ মে) ভোর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। অর্থাৎ মূল ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে যাবে। এর দুই পাশে থাকবে উত্তর উড়িষ্যা ও খুলনা উপকূল। সোমবার (২৪ মে) বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের ৬নং বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মূল পথ হলো পশ্চিমবঙ্গমুখী। যা আঘাত হানার এ অঞ্চলেই বেশি হানবে। পাশাপাশি উড়িষ্যা ও খুলনায়ও আঘাত হানবে এটি। কত গতিতে খুলনায় আঘাত হানতে পারে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখনো সুস্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে বড় আঘাত হানবে- এমনটাও বলা যাচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস প্রায় একই এলাকায় (১৬.৬ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) স্থির রয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলের কাছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে এটি। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি.। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২নং দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply