রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
খালি পেটে কখনো কোন কাজ করা ঠিক নয় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ: এনবিআর অচল, রপ্তানি কার্যক্রম ঝুঁকির মুখে একদিনে আরও ২৬২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১ জন ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালির ঝলমলে ক্যারিয়ারের আড়ালে লুকানো বিষাদের অধ্যায় মেজর লিগ ক্রিকেটে এবার নাটকীয়তার চূড়ান্ত, শেষ বলেই ছক্কা মেরে রুদ্ধশ্বাস জয়! রানওয়েতে কালো ভাল্লুক, বাতিল এক ডজন ফ্লাইট এনবিআরের শাটডাউন: সারা দেশে আমদানি-রপ্তানি ও শুল্ক-কর সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত একসঙ্গে কতটি কোয়েলের ডিম খাওয়া নিরাপদ? হিরো আলম ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে, ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ঘোষিত সময়ের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব নয়: সালাহউদ্দিন

ডাক্তার নেই নার্স নেই তবুও নাম তার হাসপাতাল

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৬৮ Time View

সম্রাট হোসেন , ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১টা। ঘটনাস্থল ঝিনাইদহ শহরের আল মামুন জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালটির মালিক ডঃ রাশেদ আল মামুন। তিনি শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তার মতো দায়িত্বশীল পদে কর্মরত। ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশারের নেতৃত্বে সোমবার দুপুরে একদল ভিজিটর আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ক্লিনিকটি পরিদর্শনে গেলেন। ক্লিনিকে ঢুকেই চক্ষু চড়ক গাছে উঠলো! এ কি হাল! ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দ্দারের মতোই দশা। হাসপাতালে সর্বক্ষন কোন চিকিৎসক নেই। নেই সনদধারী প্রশিক্ষিত কোন নার্স। পরিবেশ নোংরা। স্টোর রুমে খাবারের বাসনপত্র ও ধুলোবালিময় যন্ত্রপাতি পড়ে আছে। বিথী নামে একজন নিজেকে নার্স বলে পরিচয় দিয়ে এগিয়ে আসলেন। কিন্তু নেই কোন তার সনদ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া আমেনা খাতুন অনার্স কলেজ থেকে বিথী মানবিক বিভাগে এইচএসসি পাশ করে নার্স হিসেবে কাজ করছেন। পুর্ণিমা, রিনি, ইরিনা, জুলি ও হাজেরা খাতুন নামে যে সব নার্স আছে বলে জানানো হয়, তাদের কোন সনদ নেই। মোঃ আল আমিন নামে এক ব্যক্তি নিজেকে সহকারী ম্যানেজার বলে দাবী করে পরোক্ষনেই জানালেন তিনি কম্পিউটার অপারেটর। সাজ্জাদ হোসেন নামে এক যুবক নিজেকে প্যাথলজিষ্ট হিসেবে দাবী করলেও তিনি ঝিনাইদহ ভোকশনাল থেকে পড়ালেখা করে এখানে কাজ করছেন। আর সর্বক্ষন ডাক্তার হিসেবে যাকে রাখা হয়েছে তিনি একজন মেডিকেল এ্যসিসটেন্ট। তার নাম শামিম হোসেন। বাড়ি হলিধানী ইউনিয়নের বেড়াদী গ্রামে। এ ভাবেই জেলা শহরের উপরে বীরদর্পে পরিচালিত হচ্ছে একজন দায়িত্বশীল স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মালিকানাধীন আল মামুন জেনারেল হাসপাতাল। ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার ক্লিনিকটির এহেন হালচাল দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাঠানো তালিকাতে ক্লিনিকটির নাম নেই। সিভিল সার্জন অফিসের স্টোনো নজরুল ইসলাম জানালেন ভুলক্রমে নাম তালিকায় ওঠেনি। হাসপাতালটি লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেছে কিনা সে তথ্যও নেই সিভিল সার্জন অফিসে। হাসপাতালটির মালিক ডঃ রাশেদ আল মামুন পরিদর্শনের খবরে মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, তার শ্বাশুড়ি মারা যাওয়ার কারণে বেশ কয়েকদিন ক্লিনিকে আসতে পারেন নি। এ কারণে একটু অগোছালো রয়েছে। তিনি জানান সর্বক্ষন ডাক্তার হিসেবে একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম জানান, আপনারা পরিদর্শনে যেটা পাবেন সেটাই আদালতকে রিপোর্ট আকারে জানাবেন। এর বাইরে তিনি মন্তব্য করেন নি। উল্লেখ্য বিভিন্ন পত্রিকায় ঝিনাইদহ জেলার ক্লিনিক ও প্যাথলজি নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক বৈজয়ন্ত বিশ্বাস স্বপ্রণোদিত হয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯০(১) ধারার বিধান মতে আমলে নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর একটি আদশে দেন। আদশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে ঝিনাইদহ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক সোমবার তৃতীয় দিনের মতো গনমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার আল মামুন জেনারেল হাসপাতাল, শামীমা ক্লিনিক, ডিজিপ্যাথ, তাছলীমা ক্লিনিক ও আপন প্যাথলজি সরেজমিন পরিদর্শন করে নানা অসঙ্গতি পান।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense