রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
খালি পেটে কখনো কোন কাজ করা ঠিক নয় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ: এনবিআর অচল, রপ্তানি কার্যক্রম ঝুঁকির মুখে একদিনে আরও ২৬২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১ জন ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালির ঝলমলে ক্যারিয়ারের আড়ালে লুকানো বিষাদের অধ্যায় মেজর লিগ ক্রিকেটে এবার নাটকীয়তার চূড়ান্ত, শেষ বলেই ছক্কা মেরে রুদ্ধশ্বাস জয়! রানওয়েতে কালো ভাল্লুক, বাতিল এক ডজন ফ্লাইট এনবিআরের শাটডাউন: সারা দেশে আমদানি-রপ্তানি ও শুল্ক-কর সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত একসঙ্গে কতটি কোয়েলের ডিম খাওয়া নিরাপদ? হিরো আলম ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে, ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ঘোষিত সময়ের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব নয়: সালাহউদ্দিন

ঝিনাইদহে চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৪২৪ Time View

 সম্রাট হোসেন, ঝিনাইদহ

পেশায় একজন দলিল লেখক, সম্পদ রয়েছে অঢেল। অর্থ আর রাজনৈতিক ক্ষমতায় হয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। চলাফেরা দাপটের সঙ্গেই। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এর বিরুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি টাকা অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায়। দুর্নীতি দমন কমিশন,সজেকা যশোর কার্যালয়ের আওতাধীন (ঝিনাইদহ) এর মামলা নং ১/২০,তাং ২৩-১২-২০২০ ইং। ঝিনাইদহ জেলার এই প্রথম মামলা এবং দুদক আইন মোতাবেক মামলাটি নিজস্ব কার্যালয়ে রেকর্ড হয়েছে। দুদুক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি রেজিষ্ট্রিভুক্ত করে আগামী ৩ জানুয়ারী তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাতে নির্দেশ দিয়েছেন। নাসির উদ্দিন চৌধুরী উপজেলার সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের জামসের আলী চৌধুরীর পুত্র। তিনি বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের একজন দলিল লেখক ও দলিল লেখক সমিতির স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। নাসির উদ্দিন চৌধুরী অবৈধ পন্থায় দূর্নীতির মাধ্যমে ৫ কোটি ৭০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৪ টাকা অর্জন করেছেন। মামলা সুত্রে জানা যায়, দুদুক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের যশোরের সাবেক সহকারী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম মোড়ল নাসির উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর তদন্ত করেন। পরবর্তীতে তার তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে দায়ের হওয়া এই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে নাসির উদ্দিন চৌধুরী তার নিজ নামে ব্র্যাক ব্যাংক লিঃ যশোর শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব ও ১২ টি এফডিআর হিসাব খোলেন। এগুলোতে তিনি বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা লেনদেন করেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী হিসাব থেকে টাকা স্থানন্তর করে অন্য এফডিআর এ জমা করা হয়। সর্বপরি সকল ক্ষেত্রে এফডিআর হতে হস্তান্তর করে মূল সঞ্চয়ী হিসাবে এনে আবার সেখান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নাসির উদ্দিন চৌধুরী ০৭/০২/২০১২ তারিখ থেকে ৩০/০৭/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোট ৭ টি এফডিআর এ ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। যা থেকে তিনি ০১/১১/২০১৫ তারিখে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে একই ব্যাংকে স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে সঞ্চয়ী হিসাবে হস্থান্তর করেন। এছাড়া তিনি ওই শাখায় স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে একটি সঞ্চয়ী ও ৫ টি এফডিআর খুলে লেনদেন করেন। যার মধ্যে সঞ্চয়ী হিসাবটি এখনও চলমান রয়েছে। ০৪/০২/২০১৩ তারিখ হতে ০৭/১১/২০১৯ তারিখে ওই ৬ টি সঞ্চয়ী ও এফডিআর এর মাধ্যমে বিপুর পরিমান টাকা লেনদেন করেন। তিনি স্ত্রীর নামের এই সকল এফডিআর ও সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪১৬ টাকা উত্তোলন পূর্বক স্থানন্তর করেন। অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন তার আপন শালিকা (বর্তমান দ্বিতীয় স্ত্রী) মোছাঃ মাহফুজা খাতুন এর নামে ওই ব্র্যাক ব্যাংক শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব ও ৪ টি এফডিআর খুলে দেলদেন করেন। যার মধ্যে বর্তমানে একটিও চলমান নেই। ওই ৫ টি হিসাব পর্যালচনা করে দুদক নিশ্চিত হয়েছেন অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা জমা করে সেখান থেকে এফডিআর হিসাবে জমা করেছেন। যেখান থেকে আবার সঞ্চয়ী নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ০২/০২/২০১৪ তারিখ হতে ১৪/০৫/২০১৯ তারিখ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৫৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৮ টাকা উত্তোলন পূর্বক স্থানন্তর করেছেন। নাসির উদ্দিন চৌধুরী তার শ্যালক মোঃ জিয়াকুব আলীর নামে একই ব্র্যাক ব্যাংক ও যশোরের অন্য একটি এবি ব্যাংকে এফডিআর ও এম.আই.ডি.এস হিসাব খুলে ৮০ লাখ টাকা জমা করেছিলেন। যা সম্পূর্ণ উত্তোলন করে অন্যত্র স্থানন্তর করেছেন। যা তার শ্যালক তদন্তকারী সংস্থাকে নিশ্চিত করেছেন। নাসির উদ্দিন চৌধুরীর কলেজ পড়ুয়া পুত্র মোঃ মারুফ হোসেন রিয়াজ এর নামে রুপালী ব্যাংক লিঃ কালীগঞ্জ শাখায় আর.এস.এস হিসাব খুলে সেখানে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন। যা পরবর্তীতে উত্তোলন করে স্থানন্তর করেছেন। তিনি নিজ নামে, প্রথম স্ত্রী মিসেস খোদেজা বেগম, দ্বিতীয় স্ত্রী মিসেস মাহফুজা খাতুন, শ্যালক জিয়াকুব আলী ও পুত্র মারুফ হোসেন রিয়াজ এর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর এ জমা করে। যা পরবর্তীতে সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে অন্যত্র স্থানন্তর করেছেন। আর এই অপরাধে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। ঝিনাইদহ আদালতের দুদক পিপি মোকাররম হোসেন টুলু জানায়, গত ২৪ নভেম্বর দুদুক কর্মকর্তা ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি নথিভুক্ত করার আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে ৩০ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য্য করেন। পরবর্তীতে ধার্য্য তারিখে মামলা রেজিষ্ট্রিভুক্ত করে আগামী ৩ জানুয়ারীর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মামলার তদন্তকারী দুদুক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে দুদুক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের যশোরের উপ-পরিচালক মোঃ নাজমুস সাদায়াত জানান, নাসির উদ্দিন সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবৈধ ভাবে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করেছেন। দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমতি পেয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত ও পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্ত চলছে, এখনও আসামী গ্রেপ্তার হয়নি।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Adsense