বাঙালির খাদ্যতালিকায় ভাত সর্বোচ্চ প্রাধান্য পায়। এ কারণেই ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ শব্দটি প্রचलিত। সারাদিন নানা ধরণের খাবারের পর শেষপর্যন্ত বাঙালির মুখে ভাতই চায়। তবে শুধু ভাত খেলা যথেষ্ট নয়, ভাতের স্বাদ বাড়াতে প্রয়োজন হয় বিভিন্ন স্বাদে ভরা মসলাদার ও সুস্বাদু তরকারি।
তবে আজকাল বাঙালি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছে। ফিট থাকতে অনেকেই ভাত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ দুপুরে ভাত খান, কিন্তু রাতে তা এড়ান। তবে রাতের খাবারে ভাত খাওয়া স্বাস্থ্যকর নাকি ক্ষতিকর—এ নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্তের মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে, যেটা নিম্নরূপ:
ভাত: শক্তির উৎস
ভাত খাওয়া শক্তি অর্জনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ভাত শরীরকে প্রধানত কার্বোহাইড্রেট দিয়ে শক্তি জোগায়। কর্মব্যস্ত জীবনে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। ভাত একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা বিশেষজ্ঞরাও খাওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, ভাতে শুধু কার্বোহাইড্রেট নয়, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থও থাকে। তাই শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণের জন্য নিয়মিত ভাত খাওয়া উচিত।
রাতে ভাত খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না?
পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় বলেন, অনেকের মধ্যে ধারণা আছে যে রাতে ভাত খেলে ওজন বাড়ে, কিন্তু এ ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তাই এই ভুল ধারণা থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
রাতের খাবার সময় এবং পরিমাণ
অনেকেই রাত ১১-১২টার দিকে খাবার খান, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর চাপ বাড়ায়। তাই রাতের খাবার möglichst রাত ৮টার মধ্যে শেষ করা উচিত। এতে খাবার ভালোভাবে হজম হয় এবং শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়।
খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। রোগমুক্ত থাকার জন্য দৈনন্দিন ক্যালোরি হিসাব করে খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। রাতের খাবারে ক্যালোরির মাত্রা পরিমাপ করে ভাতের পরিমাণ ঠিক করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমে।
সবাই হয়তো ক্যালোরি গননা করতে পারেন না, তাই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাদ্যতালিকা নির্ধারণ করাই ভালো।
বিভিন্নতা আনার গুরুত্ব
প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে ভাত খাওয়ার প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে কিছুদিন ভাতের পরিবর্তে ওটস, রুটি, ডালিয়া ইত্যাদি খাদ্য গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে শরীরের জন্য আরও উপকার হয়।
Leave a Reply