
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশে আয়োজন করা হচ্ছে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম পরিবেশ কর্মসূচি। ‘প্লাস্টিক দূষণ কমাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে পালিত হবে বৃক্ষরোপণ, প্লাস্টিক দূষণবিরোধী মানববন্ধন ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন।
তরুণদের পরিবেশবিষয়ক অন্যতম সংগঠন ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’ এ আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা, যার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর), ইয়্যুথ ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ, তরু পল্লব, স্বপ্নপূরী কল্যাণ সংস্থা, ছাওয়াবসহ আরও ৫৭টি জাতীয় ও স্থানীয় পরিবেশবান্ধব সংগঠন।
বুধবার (৪ জুন) আয়োজকদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিটি জেলায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা অন্তত ১০০টি করে গাছ রোপণ করবে। এগুলো স্কুল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির আঙিনায় স্থায়ীভাবে লাগানো হবে। এছাড়া দরিদ্র পরিবারগুলোকেও ১০টি করে গাছ উপহার দেওয়া হবে। জেলা শহরগুলোতে প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বাজার, দোকান ও সড়কে পথচারীদের মাঝে লিফলেট, পোস্টার ও জনসংযোগের মাধ্যমে প্লাস্টিকের ক্ষতি এবং এর বিকল্প ব্যবহার সম্পর্কেও সচেতনতা তৈরি করা হবে।
ক্যাপস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “৬৪ জেলায় একযোগে পরিবেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।” তিনি সারাদেশে আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পলিসি ও ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর বারীশ হাসান চৌধুরী বলেন, “পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে স্থানীয় পর্যায় থেকেই সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষ পরিবেশ সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমরা বহু বছর ধরে কাজ করছি, এবার দেশ ও বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই যে, আমরা এই সমস্যা সমাধানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি বলেন, “এই কর্মসূচি কেবল গাছ লাগানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—এটি ভবিষতের জন্য আশাবাদ, দায়িত্ব ও স্থায়িত্ব রোপণের প্রতীক। আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা সবুজ বিপ্লবের অংশীদার হোক। এই আয়োজন দেশের ৪৯৫টি থানায় বছরব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও প্লাস্টিক দূষণবিরোধী কার্যক্রমের প্রথম ধাপ। ধাপে ধাপে আমরা দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এ কর্মসূচি বিস্তৃত করতে চাই।”