শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাভারে এসি বিস্ফোরনে ৭ জন দগ্ধ সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত পলাশ উপজেলা প্রেসক্লাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন মাদারীপুর ঝাউদিতে ১৫টি বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ মাদারীপুরের কালকিনিতে জমি নিয়ে বিরোধেরে জেরে অস্ত্রের মহড়া, ককটেল বিস্ফোরণ রাজারহাটে তিস্তার নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু নড়াইলে পুলিশের অভিযানে ০১ বছর ০২ মাস সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার ০১ কল রিসিভ করলেই তথ্য হ্যাক, বিষয়টি সঠিক নয় ইসরায়েল থেকে ঢাকায় ফ্লাইট নামা রহস্যজনক : রিজভী

আমার বাবা – আমার ভালোবাসা (পর্ব-০২)

লেখক মোঃ অলিউর রহমান
  • Update Time : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১
  • ২৮৭ Time View

আমি আগের পর্বে বলেছিলাম রং, বাবার ভালোবাসা এবং বাবা দিবস কোন নির্দিষ্ট সীমানা, গন্ডি অথবা কোন খাঁচায় বন্দী করে সংরক্ষনের বিষয় নয় যা নির্দিষ্ট দিনে পালন করবো বা প্রকাশ করবো । এটা এক অনন্ত ভালোবাসার গল্প যার নেই কোন সীমারেখা বা নির্দিষ্ট ধরণ ।

বাবার ভালোবাসাকে আমি উপভোগ করি যখন বাবা হাজার কষ্ট করেছি বাড়ি ফেরার পরে আমার কপালে তার অকৃত্রিম ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দেয় অথবা যখন তার মহব্বতের হাতখানা দিয়ে আমার এলোমেলো চুলগুলোর ভিতরে তার আঙ্গুলগুলো ঢুকিয়ে আলতো সঞ্চালিত করে এবং আলতভাবে চাপ দেয় অথবা যখন অপরিসীম আবেগ নিয়ে আমার পিঠে আলতোভাবে তার হাত দিয়ে আদরের চড় বসিয়ে দেয় ।

আরো বেশি করে আমি অনুভব করি যখন আমার মুখে তার ডান হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে অথবা বাবার এক হাতের তালু দিয়ে আমার থুতনিকে উঁচুতে ধরে আমার চেহারার দিকে এক পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে । এই ভালোবাসা কখন, কোন অবস্থায়, কিভাবে বাবার মনে হাজির হয় অথবা তার প্রকাশ ঘটে তা আমার বাবাও জানেন না, আমিও জানি না ।

এটা একমাত্র অন্তরের অন্ত:স্থল হতে জাগরিত, ঐশ্বরিকভাবে অনুভূত , আত্মতৃপ্তি এবং উপলব্ধির নাম । এ ভালবাসা প্রাকৃতিকভাবেই বাবা – সন্তানের ভিতরে তৈরি হয় ‌। বাবা সন্তানের এই ভালোবাসা শুধু আমরা বাবার আদর- আহ্লাদ এর ভিতরেই উপভোগ করি না বরং তার শাসনের ভিতরেও এগুলোকে মনে মনে লালন করি এবং উপভোগ করি ।

আমি যখন দুষ্টুমি করেছি আর আমার বিরুদ্ধে কেউ নালিশ করেছে তখন বাবার কাছ হতে আমি যে বকুনি শুনেছি তারই মধ্যেই আমি বাবার ভালোবাসা এবং উত্তম মানুষ হওয়ার শিক্ষা ও গন্ধ খুঁজে পেয়েছি । কেননা সবকিছু তো আমার ভালোর জন্যই ছিলো ।

আমার চরিত্র গঠন অথবা সমাজের প্রতি আমার আচরণগুলোকে সংশোধন করার জন্যই তো বাবার এই সব শাসনের গল্প ছিলো । বাবার ভালোবাসাকে কখনো আমি উপভোগ করেছি পড়ার টেবিলে । আমি সন্ধাবেলায় পড়তে বসলে আমার বাবা একদৃষ্টিতে লক্ষ্য রাখতেন আমি লেখাপড়া করছি কিনা সে দিকে ।

আমি ভালো রেজাল্ট করতে পারবো কিনা বাবার কপালের এই চিন্তার কালো রেখার ভিতরেই আমার বাবার চন্দ্রের মতো ভালোবাসার আলো কে আমি খুঁজে পেতাম । যখন দেখতে পাইতাম আমি অসুখে পড়েছি আর আমার বাবা চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছে তার ভিতরেই আমার আদর্শ বাবার ভালোবাসার স্বাদ আমি খুঁজে পেয়েছি ।

বাবা আমাকে কিভাবে ভাল ডাক্তার দেখাবে ? কিভাবে ঔষধ এনে দেবে ? কিভাবে ছেলেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তুলবে ? বাবার ভালোবাসার এই বিনা সুতার টান এর ভিতরেই চুম্বকের মতো এক ভালোবাসার খেলা আমার শিরায়- উপশিরায়, ধমনীতে ধমনীতে বয়ে যেত ভালোবাসার প্লাবণের বন্যায় ‌।

আমি যেদিন জন্মগ্রহণ করেছিলাম সেই দিন আমার রক্ত এবং ময়লা লাগানো গাখানি পুরাপুরিভাবে পরিষ্কার না করেই একটি তোয়ালেতে পেঁচিয়ে আমার বাবার কোলে আমাকে তুলে দেওয়া হয়েছিল । আর আমার বাবা কোন প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব বিচার না করে আমার দেহের ময়লাযুক্ত কপালে তার অকৃত্রিম এবং ঐশ্বরিক ভালোবাসার চুম্বনখানি অতি আবেগের সাথে আমার ময়লাযুক্ত ও রক্তমাখা কপালে বসিয়ে দিয়েছিলেন। উনার মুখখানিকে আমার ময়লা কানে বসিয়ে আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ….. এই আযানের ধ্বনি শুনেয়ে দিয়েছিলেন ।

সেই সময় থেকেই আমার প্রতি আমার বাবার ভালোবাসা শুরু এবং এরপর যতদিন তিনি বেঁচেছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাকে শুধু ভালোবেসেই গেছেন । রোগ-শোক , সুখ-দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বিষাদ সবকিছুতে আমার বাবা আমার মাথার ছাতা এবং বটবৃক্ষ হিসেবে কাজ করেছেন আজীবন ।

অন্যদিকে বাবার প্রতি আমার ভালোবাসা কবে থেকে কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে তা আমার দ্বারা বলা মুশকিল । কেননা একজন মানুষের চার বছরের বয়সের পূর্বের ঘটনা সে মনে করতে পারে না । কিন্তু আমাদের সমাজে ছয় মাস বয়স থেকে শুরু করে চার বৎসর বয়স পর্যন্ত শিশুর কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় যে, বাবা-মায়ের প্রতি শিশুদের ভালোবাসাও তার জন্মের অল্প কিছুদিন পরেই পরিলক্ষিত হয় ।

হয়তোবা শিশু তা প্রকাশ করতে পারে না কিন্তু তার ঠোঁটের হাসি, জীহবার নাচন এবং মুখে মুখে হুঙ্গা হুঙ্গা শব্দ বুঝিয়ে দেয় যে, সেও তার মা-বাবাকে ভালোবাসে । চলবে ।

আলোকিত জনপদ ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
https://www.facebook.com/alokitojanapad

আলোকিত জনপদ টুইটার আইডিটি ফলো করুন
https://twitter.com/AlokitoJanapad

দেশ বিদেশের সব খবর সবার আগে জানতে আলোকিত জনপদ ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন।
ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

আলোকিত জনপদ এর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন

আলোকিত জনপদ .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category