
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পৃথিবীর কোথাও ফ্যাসিস্ট শাসকদের পুনরুত্থান হয়নি, এবং বাংলাদেশেও তা সম্ভব নয়। ফ্যাসিস্টরা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। ইতালি, জার্মানি সহ বিশ্বের কোনো গণতন্ত্রকামী মানুষ ফ্যাসিস্টদের পুনরায় শাসন করতে দেয়নি।
তিনি বলেন, যারা নিজেদের দেশের শিশুদের রক্ত ঝরিয়েছে, তারা কীভাবে রাজনীতি করবে? যদি তাদের পুনরুত্থান ঘটে, তাহলে তারা আন্দোলনে অংশ নেওয়া সেই মানুষদের হত্যা করবে, যারা চোখ হারিয়েছে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়েছে, এবং যারা গুম, নির্যাতন ও গায়েবি মামলায় বন্দী ছিল, তাদের ওপরও শেখ হাসিনার মর্মান্তিক কর্মসূচি নেমে আসবে।
রিজভী এসব কথা বলেন বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর), শহীদ তাহমিদ ও মাসুদ রানার পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মিরপুরে সাক্ষাৎ শেষে। তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আতিকুর রহমান রুমন, মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
রিজভী আরও বলেন, শহীদদের পরিবারগুলো কষ্টে আছে। মাসুদ রানার আয়ে তার পরিবার চলত, তার স্ত্রী অসহায় অবস্থায় আছেন, আর তার শিশুকন্যা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তাহমিদ এমএ পাস করলে চাকরি পেত, তার পরিবারও দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। এই পরিবারগুলো যেন সহায়তা পায়, তাদের সন্তানদের সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা হয়, এমন দাবিও তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ মহি সমবায় ব্যাংকের ৭৩৯৮ ভরি সোনা ভুয়া মালিক সাজিয়ে বিক্রি করেছেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে অনাচার, লুটপাটের লাইসেন্স দিয়েছেন। তার আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তারা শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষেই কাজ করছেন।
রিজভী বলেন, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অতি ধনীদের উত্থান ঘটেছে, যারা বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেগা প্রজেক্ট ও পদ্মা সেতুর নাম করে টাকা লুট করেছে। তারা সমাজে বড় প্রভাব ফেলছে। দেশবাসী নতুন করে ফ্যাসিস্টদের উত্থান চায় না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার বিশ্বের কোনো দেশের সাথে কী কী অসমচুক্তি করেছে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে, নইলে সরকারের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এছাড়া তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।