মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মেহেরপুর-২ আসনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ “চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করেও বিএনপির অস্তিত্ব মুছে ফেলা যায়নি” মাজার জিয়ারত দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন ইলিয়াসপত্নী লুনা মিশরের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মির্জা ফখরুল নতুন অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার সময় যে ৫টি সাধারণ ভুল মানুষ প্রায়ই করে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার পরিত্যক্ত নৌঘাঁটি পুনরায় সংস্কারের কাজ করছে সাগর জাহানের নতুন মেগা সিরিয়াল ‘বিদেশ ফেরত’ ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ‘মায়ের ডাক’ তুলি হয়ে উঠলেন জোটের সহযোগীদের জন্য নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ করল বিএনপি গোপালগঞ্জের তিন আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা

জীবন জীবিকার হাতিয়ার হল মাটি! অন্য পেশার কাজ যানলে ছেরে দিতাম কবে

মাদারীপুর প্রতিনিধি, রতন দে
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩
  • ৪৭৭ Time View
17

ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে নিপুন হাতে কারু কাজের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরি করে থাকেন নানা তৈজসপত্র। তাদের জীবন জীবিকার একমাত্র হাতিয়ার হলো মাটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে নিপুন হাতে মাটির তৈরি তৈজসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে।

দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে আধুনিকতা। আর এই আধুনিকতা বাড়ার সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি শিল্পপণ্যগুলো। এক সময় মাটির তৈরি তৈজসপত্রের প্রচুর ব্যবহার ছিল। সেই জিনিসত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র। এসবের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই।

তাই টাকা বেশি হলেও এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রই কিনে থাকে সাধারণ মানুষ। কাঁচ, প্লাস্টিক আর মেলামাইনের ভিড়ে এখন মাটির তৈরি ঐ জিনিসপত্র গুলো প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পাড়ছে না। অন্য কোন পেশার কাজ কর্ম জানলে এই পেশা ছেরে দিতেন বলে জানান মনষা পাল ও নিমাই পাল।

জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি থানা সংলগ্ন পালপাড়া(পৌরসভা),ডাসার উপজেলা ও গৌরনদী উপজেলার সিমান্তবর্তি বাকাই পালপাড়া ১০০ টি কুমার পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে ৯০টি পরিবার সরাসরি মৃৎ শিল্পের উপর নির্ভশীল। দিন রাত একাকার করে মাটি দিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন মৃৎ পণ্য।

কিন্তু সঠিক দাম না পাওয়ায় আর বর্তমান অবস্থায় কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে এ সকল কারিগররা। বর্তমানে গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন উৎসব, মেলায় তৈরি খেলনা পুতুল ছাড়া অন্য কোন মৃৎ শিল্পের গ্রাহক নেই বললেই চলে। বর্তমানে অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও স্টিলের জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। ফলে এ পেশায় জড়িত বিশেষ করে এটাই যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন তাদের জীবনযাপন একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৃৎ শিল্পীরা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন পুতুল, ফুলের টব, হাঁড়ি পাতিল,কলসি,ঝালা,ঝাজর,হাজ,হড়া,দধির পাতিল ও ব্যাংক ঘট সহ বিভিন্ন নৃত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। পরে সেগুলোকে বিভিন্ন রংঙে সাজিয়ে তারা শহরের দোকান এবং বাসা বাড়িতে বিক্রয় করে থাকেন।

বর্তমানে দেশের সব জায়গায়ই অ্যালুমিনিয়াম,প্লাস্টিক ও স্টিলের তৈরির ব্যবহার বেশী হওয়ায়, মাটির তৈরির পন্য বিক্রয় আজ খুবই কম। মনষা পাল,নিমাই পাল বলেন, আমার তালোইর আমল প্রায় ২০০ বছর আগের থেকে এ কাজের সাথে জরিত। এ সমস্ত মাটির তৈরি জিসিপত্র বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে গেলে মুহুর্তের মধ্যে বেচা হইত এখন সারাদিন বসে থেকে এক হাজার টাকাও বিক্রয় হয় না। আগের চেয়ে এখন খরচও বেশী, কিন্তু মূল্য সে হিসেবে পাই না। ১০০ টাকা দিয়ে যে মাটি কিনতাম তা এখন দুই হাজার টাকায়ও পাই না। আমাদের জীবন জীবিকার এক মাত্র হাতিয়ার ছিল মাটি। অন্য কোন কাজ কর্ম জানিনা,জানলে এই পেশার ছেরে দিতাম কবে। সরকার যদি আমাদের একটু সাহায্যে সহযোগিতা করতো,তাহলে আমাদের সংসারও চলতো আবার এই পেশাটা ধরে রাখতে পারতাম।

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

More News Of This Category